আজ (বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সাজেকে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের কাছে দেয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, 'সাজেকে অগ্নিকাণ্ড খুবই দুঃখজনক। এতে কী পরিমাণ ক্ষতি হলো আমরা অনুমান করতে পারছি না। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আমরা অলরেডি কথা বলেছি। মালিক সমিতিকে এই নিশ্চয়তা দিতে চাই, যদি কর্পোরেট কোন লোনের ব্যবস্থা করে দিতে পারি। আমি সিরিয়াসলি অর্থ উপদেষ্টার সাথে কেবিনেটে কথা বলবো।'
এ সময় রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরা, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ সহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে 'অগ্নিকাণ্ডে সাজেকে তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি' জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহর এমন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিক্ষুব্ধ স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ীরা প্রতিবাদ ও সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এসময় তারা জেলা প্রশাসককে ক্ষমা প্রার্থনার দাবি তুলেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া বিকেল তিনটায় সাজেক পৌঁছালেও প্রায় দুই ঘণ্টা পরে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন পার্বত্য উপদেষ্টা। পরে আর্মি রেস্টহাউজ চত্বরে ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে কথা বলে বিভিন্ন আশ্বাস দেন।
এদিকে সাজেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি আজ সকাল সাড়ে এগারোটায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এরমধ্যে দিয়ে তদন্ত দলের আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু হয়েছে।
তদন্ত কমিটির প্রধান রাঙামাটি জেলার স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক মো. মোবারক হোসেন, সদস্য সচিব বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আক্তারসহ তদন্ত কমিটির ৫ সদস্য ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় তদন্ত কমিটির অপর তিন সদস্য বাঘাইছড়ি সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার, দীঘিনালা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী, ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক সাথে ছিল।
তদন্ত শেষে কমিটির প্রধান বলেছেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তারা তিনটি বিষয়কে বিবেচনায় নিয়ে এগুচ্ছেন। এরমধ্যে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট, রান্নাঘরের চুলা ও সিগারেটের আগুন থেকে এমন ঘটনা ঘটতে পারে। এছাড়া স্থাপনার পাশে রাখা কোন দাহ্য পদার্থ থেকেও আগুন লাগতে পারে। সব বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে ৫ সদস্যদের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন। এতে আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটি অগ্নিকাণ্ডের উৎস ও কারণ উদ্ঘাটন এবং এজাতীয় দুর্ঘটনা প্রতিরোধকল্পে সুপারিশ প্রেরণ করবেন। প্রয়োজন হলে এক বা একাধিক সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবেন।
এদিকে অগ্নিকাণ্ডে বসতঘর পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ৩৬ টি ত্রিপুরা ও লুসাই পরিবারের মাঝে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আজ সকালে ত্রাণ ও নগদ অর্থ সহায়তা দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে ৭ হাজার ৫০০ টাকা, ৩০ কেজি চাল, কম্বল ও শুকনো খাবার রয়েছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদেরকে এখন পর্যন্ত কোনো সহায়তা দেয়া হয়নি।
এদিকে সাজেক কটেজ মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক রাহুল চাকমা জন বলেন, 'আমরা প্রশাসনের কাছে চারটি দাবি জানিয়েছি। এগুলো হলো, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সুদবিহীন ঋণের ব্যবস্থা, পর্যটনকেন্দ্রের নিরাপত্তার জন্য সাজেকে ফায়ার সার্ভিস স্থাপন ও হাসপাতাল নির্মাণের। প্রশাসনও আশ্বাস দিয়েছেন।'