কর্মসংস্থান-পড়াশোনাসহ নানা কারণে বিদেশি ভাষা শেখায় তরুণদের আগ্রহ বাড়ছে

0

দেশের অনেক তরুণ এখন বিদেশি ভাষা শিখছেন। কর্মসংস্থান, পড়াশোনাসহ নানা কারণে এসব বিদেশি ভাষা শেখার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে বাংলাদেশিদের। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, একাধিক ভাষা জানলে সেটা ব্যক্তির ভবিষ্যৎ জীবনে কাজে লাগে। তাই প্রতিযোগিতার এই যুগে মাতৃভাষার পাশাপাশি আরও কয়েকটি বিদেশি ভাষা শেখার পক্ষে মত তাদের।

এক তরুণের মাতৃভাষা বাংলা। তবে জীবিকার আশায় কয়েকদিনের মধ্যে তিনি পাড়ি জমাবেন জাপানে। তাই এখন একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে তিনি জাপানি ভাষা শিখছেন।

একসময় দেশে বিদেশি ভাষা হিসেবে ইংরেজি ভাষা শেখার চল ছিল। তবে এখন কর্মসংস্থান, পড়াশোনাসহ নানা কারণে বিভিন্ন বিদেশি ভাষা শেখার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে বাংলাদেশিদের।

একজন তরুণ বলেন, 'আমার একটা স্বপ্ন আছে। আমি ওখানে একটা ক্যারিয়ার গড়তে চাই। সেজন্য আমি জার্মান ভাষাটা শিখছি।'

অন্য একজন তরুণ বলেন, 'ইংরেজির পরও যদি কোনোকিছুর কথা বলি তাহলে কয়েকটি ভাষা শেখা দরকার আসলে।'

কর্মসংস্থান বা পড়াশোনার জন্য বিদেশি ভাষা শেখা অত্যাবশ্যকীয় হলেও আজকাল অনেকেই বিদেশি ভাষা শিখছেন শুধুই শখের বসে। আবার কেউ কেউ শিখছেন বিদেশি সংস্কৃতিকে বোঝার জন্য।

একজন তরুণী বলেন, 'ভবিষ্যতে আমার এগুলো প্রয়োজন আছে কি না সেটা না। শুধু এখন শখের বসে শিখছি।'

একজন তরুণ বলেন, 'আমি এখন পর্যন্ত হাতে কলমে শিখেছি চারটা ভাষা। এবং বলতে পারি ছয়টা ভাষা।'

দেশে বর্তমানে কতজন শিক্ষার্থী বিদেশি ভাষা শিখছেন তার সংখ্যা জানা না গেলেও যারা বিদেশি ভাষা শেখান তারা জানালেন দিন দিন এই সংখ্যা বাড়ছে। আর এ কারণেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে গড়ে উঠেছে বিদেশি ভাষা শেখার সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।

বাংলাদেশ-জার্মান কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী ফৌজিয়া শাহনাজ বলেন, 'আসলে তারা দক্ষ জনবল হিসেবে যাওয়ার জন্যই শিখে। যেমন কোরিয়া যেতে চায়, জাপান যেতে চায়। এগুলোতে অনেক জবের সুবিধা আছে। যেমন জাপানের একটাই মেইন শর্ত একটাই তাদের ভাষা শিখে যেতে হবে। এজন্য ভাষা শেখার হার দিন দিন বাড়ছে।'

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, শুধু বিদেশে কর্মসংস্থান বা পড়াশোনার জন্য নয় বরং একাধিক বিদেশি ভাষা জানা থাকলে সেটা ব্যক্তির ভবিষ্যৎ জীবনেও কাজে লাগে। তাই প্রতিযোগিতার এই যুগে মাতৃভাষার পাশাপাশি আরও কয়েকটি বিদেশি ভাষা শেখার পক্ষে মত তাদের।

আরো পড়ুন:

বিদেশি ভাষার প্রশিক্ষক গোলাম রসুল বলেন, 'প্রথমে আমরা যদি আমাদের মাতৃভাষাটা ঠিকমতো শিখি এবং তারপরই ছোটবেলাতেই যদি অন্য একটা বিদেশি ভাষা শিখে ফেলি তাহলে এটা আমাদের প্রাপ্তবয়স্ক জীবনে অনেকগুলো সম্ভাবনা, অনকগুলো দরজা খুলে দিবে।'

আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকার শিক্ষক সমন্বয়কারী মোহাম্মদ লুৎফর রহমান বলেন, 'বাংলাটা আমাদের অন্তরে আছে, ভাষা শেখা একটা মাধ্যম। এই মাধ্যমে আমি মনে করি যে, আমরা অন্যকে বালো বুঝতে পারি।'

বর্তমানে বাংলাদেশের তরুণদের মধ্যে ইংরেজি ভাষার পাশাপাশি জার্মান, ফ্রেঞ্চ, কোরিয়ান, জাপানিজ, চাইনিজ ভাষা শেখায় আগ্রহ বাড়ছে। তাই বাংলাদেশিদের বৈশ্বিক যোগাযোগে দক্ষ করে তুলতে এসব ভাষার প্রশিক্ষণে সরকারের মনোযোগ বাড়ানো দরকার বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

বাংলাদেশ এখন গ্লোবাল ভিলেজের অংশ। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এখন বাংলাদেশ থেকে জনবল যাচ্ছে। তাই বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিককে মাতৃভাষায় দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি আরো অন্তত দুই একটি ভাষা রপ্ত করার কোনো বিকল্প নেই। এতে একদিকে যেমন ভিন্ন সংস্কৃতির সঙ্গে আলাপ করা সহজ হয় অন্য দিকে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আমাদের ব্যবসায়-বাণিজ্যের পথও সুগম হয়।

এসএস