দায়িত্ব নেয়ার পর লাতিন আমেরিকার ছোট্ট দেশ পানামার মধ্য দিয়ে বিদেশ সফরের সূচনা করলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। সাধারণত বিশ্বের প্রভাবশালী বড় কোনো দেশ দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ যাত্রা শুরুর কথা থাকলেও এবার ঘটেছে তার ব্যতিক্রম। পানামা খাল নিয়ন্ত্রণে নিতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নেই মূলত তড়িঘড়ি করে সেখানে গিয়েছেন তিনি।
রোববার (৩ ফেব্রুয়ারি) পানামা খাল পরিদর্শন করে রুবিও অভিযোগ তোলেন, চুক্তি উপেক্ষা করে পরোক্ষভাবে খালের নিয়ন্ত্রণ করছে চীন, যা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হুমকিস্বরূপ।
তবে রুবিওর সঙ্গে সাক্ষাতে এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন পানামার প্রেসিডেন্ট। খাল পুনর্দখলে যুক্তরাষ্ট্রের এমন চেষ্টাকে সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত বলছেন পানামার প্রেসিডেন্ট।
পানামার প্রেসিডেন্ট রাউল মুলিনো বলেন, 'পানামা খাল নিয়ে চুক্তির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে এখানে চীন হস্তক্ষেপ করেছে, ট্রাম্পের এ ধারণা ভুল। এ বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য টেকনিক্যাল টিম পাঠানোর অনুরোধ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি। তবেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।'
মার্কিন প্রতিনিধির পানামা সফর ঘিরে ক্ষোভে ফুঁসছে সেখানকার জনগণ। রাজপথে বিক্ষোভও করেছেন তারা।
পানামার স্থানীয় একজন বলেন, 'ট্রাম্প কানাডায় শুল্কারোপ করছেন, মেক্সিকোতে আক্রমণ করতে চান, পানামা খালের দখল চান, গ্রীনল্যান্ড কবজা করতে চান। ট্রাম্প আসলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকেই হাঁটছে। সব জায়গায় তার আধিপত্যের বিস্তার।'
পানামায় বসবাস করা একজন বলেন, 'ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পাঠিয়েছেন পানামা খাল দখলে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলতে। ন্যায়বিচারে সে এটা কোনোভাবেই পান না। হয়তো জোর করে কিংবা অন্যায়ভাবে এটা দখল নেবেন তিনি।'
এদিকে কূটনৈতিক পন্থায় পানামা খালে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তবে সেনা মোতায়েন হবে না বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, 'পানামায় সেনা মোতায়েন প্রয়োজন হবে বলে মনে হচ্ছে না। তবে সেখানে ভয়াবহ ঘটনা ঘটছে। গোটা বিশ্বের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত এর সঙ্গে। কারণ ইতোমধ্যের পানামার ৭০ শতাংশের নিয়ন্ত্রণ চীনের হাতে চলে গেছে। যেটা ঠিক নয়।'
প্রশান্ত ও আটলান্টিক মহাসাগরের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী ৮২ কিলোমিটার দীর্ঘ পানামা খাল দিয়ে পরিবহন হওয়া ৭৪ শতাংশ পণ্যবাহী কার্গো যুক্তরাষ্ট্রের। আর চীনের ২১ শতাংশ। বিশ্ববাণিজ্যের পাঁচ শতাংশে পানামা খালের সরাসরি অবদান রয়েছে। বিশ্বের প্রায় দুই হাজার বন্দরের সঙ্গে বাণিজ্য সংযোগ রয়েছে এ খালের।