গালফ অব মেক্সিকোর নাম পরিবর্তন করে 'গালফ অব আমেরিকা', পানামা খালের দখল ও গ্রিনল্যান্ড কেনার মতো বিতর্কিত সব ইস্যু সঙ্গে নিয়েই যুক্তরাষ্ট্রের মসনদে বসেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশ্বে আধিপত্য বাড়ানোর চিরায়ত বৈশিষ্ট্য থেকেই হয়তো এসব সিদ্ধান্ত মার্কিন এই প্রেসিডেন্টের।
তবে ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্ত ব্যাপক সমালোচনা কুড়াচ্ছে বিশ্বজুড়ে। চীনের গ্লোবাল টেলিভিশন সিজিটিএন পরিচালিত বিশ্বব্যাপী অনলাইন জনমত জরিপে দেখা যায়, এতে অংশগ্রহণকারী ৭৮ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্রের এ পদক্ষেপগুলোকে আঞ্চলিক সম্প্রসারণমূলক আধিপত্য বলছেন।
শুধু জরিপ নয় মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন সিদ্ধান্তে সরাসরি ভুক্তভোগীরাও ক্ষোভে ফুঁসছেন। এমনি একজন ডেনমার্কের রাজনীতি বিষয়ক বিখ্যাত টেলিভিশন সিরিজ বোর্গেনের নাট্যকার এডাম প্রাইস। বন্ধু রাষ্ট্র হয়েও কেন গ্রিনল্যান্ডের দিকে হাত বাড়িয়েছেন ট্রাম্প?- জানতে চান তিনি।
ডেনমার্কের লেখক ও নাট্যকার এডাম প্রাইস বলেন, ‘এটা খুবই অবাক করা বিষয় হবে যদি কোন দিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে খবরের কাগজে দেখি গ্রিনল্যান্ড যুক্তরাষ্ট্রের! গ্রিনল্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ কেন ট্রাম্প নিতে চান? বিষয়টি অত্যন্ত আশ্চর্যের।
বহু আগেই থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের চোখ আর্কটিক মহাসাগরের দিকে। রাশিয়া ও চীনের পাশাপাশি তারাও সেখানে প্রভাব খাটাতে চায় জোরালো ভাবেই। ২০১৯ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের পরই ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত এ অঞ্চলটির কেনার আগ্রহ দেখান ট্রাম্প। আর এবার ক্ষমতা গ্রহণের পর পরই এ বিষয়ে পদক্ষেপের কথা জানায় হোয়াইট হাউস।
তবে প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর গ্রিনল্যান্ডের অখণ্ডতা রক্ষায় একজোট এ অঞ্চলের মানুষ।
ডেনমার্কের রাজনীতি বিশ্লেষক নোয়া রেডিংটন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ডেনমার্কের বন্ধু রাষ্ট্র হয়েও কেন গ্রিনল্যান্ড কিনতে চায়, জানা নেই। আমেরিকা কী চায় তা আসলে বুঝা মুশকিল। ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড কেনার স্বপ্ন কখনও বাস্তবে রূপ নেবে না। কারণ এটা অসম্ভব।’
বিপুল পরিমাণ খনিজ সম্পদে ভরপুর গ্রিনল্যান্ডে রয়েছে ৫৬ হাজার অধিবাসী। ৩ শ' বছর থেকে ডেনমার্কের নিয়ন্ত্রণে থাকা এ অঞ্চলের মানুষেরা স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে পুঁজি করে দিন পার করছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন এ ঘোষণায় তাই বড় ধরণের প্রভাব পড়তে পারে এ অঞ্চলের সাধারণের মধ্যে।