এর আগে এমন অন্ধকারাচ্ছন্ন রাতের চিত্র কখনো দেখেনি কিউবানরা। কারণ জাতীয় পাওয়ার গ্রিড বিপর্যয়ে পুরো দেশের বিদ্যুৎহীন হওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম।
স্থানীয় সময় (শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর) দুপুরে আচমকাই বন্ধ হয়ে যায় দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র অ্যান্টোনিও গুইতেরাস। এতে ব্ল্যাক আউটের শিকার হয় গোটা দ্বীপরাষ্ট্র।
রাতে রাজধানী হাভানার কিছু অঞ্চলে বিদ্যুৎ ফিরলেও এখনো অন্ধকারে প্রায় ১ কোটি বাসিন্দা। এমন পরিস্থিতিতে বন্ধ রাখা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অধিকাংশ বিনোদন কেন্দ্র। বাতিল করা হয়েছে কম গুরুত্বপূর্ণ সরকারি পরিষেবা। সংকটপূর্ণ এই মুহূর্তে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন কিউবার প্রেসিডেন্ট। এছাড়াও গুজব প্রতিরোধে জনগণকে সজাগ থাকার ওপর জোর দেন তিনি।
কিউবার প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল দিয়াজ ক্যানেল বলেন, 'আমরা খুবই বাজে সময় পার করছি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়াচ্ছে একটি চক্র। গুজব রুখতে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কাজ করছে সরকার।'
কিউবার গ্রিড পরিচালনা সংস্থা ইউএনই এর আশা শনিবার রাতের মধ্যে চালু করা সম্ভব হবে ৫টি জ্বালানি তেল চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অবসর সময় কাটাতে ব্যস্ত ছিলেন বহু মানুষ। বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরে বেড়ানোর পাশাপাশি ডোমিনো খেলে সময় পার করেন অনেকে। কেউবা খুঁজে নেন বিনোদনের উপলক্ষ্য।
কিউবানদের মধ্যে একজন জানান, এই সময়ে ডোমিনো খেলা ছাড়া কিছুই করার নেই। বাজে সময়ের মধ্য দিয়ে দিন পার করছি।
আমি বাণিজ্যিক এলাকায় থাকি। তাই কখনো বিদ্যুৎ যেতো না। কবে এবার বিদ্যুৎ ছাড়াই দিন কাটাতে হচ্ছে বলেও জানান একজন।
আরও একজন জানান, আমার দাদির জন্মদিন ছিল। তাই উনাকে বিশেষ অনুভব করাতেই উদযাপন করতে এসেছি।
পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় জর্জরিত কিউবা দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। তাই কমে গেছে ভেনেজুয়েলা, রাশিয়া ও মেক্সিকো থেকে তেল আমদানির সক্ষমতা। এতে জ্বালানি সংকটের পাশাপাশি দিন দিন প্রকট হচ্ছে খাদ্য সংকট। যদিও দেশটির প্রধানমন্ত্রী বলছেন, হারিকেন মিল্টনের আঘাতে জ্বালানি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বিপর্যয় নেমে এসেছে জাতীয় পাওয়ার গ্রিডে। অর্থনৈতিক দুরাবস্থায় ২০২০ সাল থেকে দেশ ছেড়েছেন ১০ লাখের বেশি কিউবান।