উত্তর আমেরিকা
বিদেশে এখন
0

মার্কিন নির্বাচন জরিপে ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে কামালা

আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কামালা হ্যারিসের লড়াই ঘিরে রাজনৈতিক উত্তেজনা এখন তুঙ্গে রয়েছে। ইতোমধ্যেই জনমত জরিপে ঝানু রাজনৈতিক ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে আছেন কামালা। তবে শেষ পর্যন্ত কে কোন প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীকে ঘায়েল করে জয় নিশ্চিত করতে পারে সেদিকেই তাকিয়ে আছে পুরো বিশ্ব। বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক হিসেবে ও অভিজ্ঞতার আলোকে ট্রাম্প অনেকটাই এগিয়ে থাকলেও, বেশকিছু ক্ষেত্রে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের চেয়ে এগিয়ে আছেন কামালা। শুধু তাই নয়, নির্বাচনি প্রচারণায় এগুলোকে তিনি ঢাল হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন বলেও মত সংশ্লিষ্টদের।

গেল ১৩ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়ার এক নির্বাচনি জনসভায় গুলির ঘটনায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই ঘটনার ভর করে নির্বাচনি লড়াইয়ে নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে উঠে পড়ে লাগেন রিপাবলিকানরা।

অন্যদিকে বয়সের কারণে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেতৃত্ব ও সক্ষমতার প্রশ্নে রীতিমতো অগ্নিপরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয় ডেমোক্র্যাটিক পার্টিকে। দলের ভেতরে ও বাইরে নানামুখী চাপে শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে ভোটের লড়াই থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন বাইডেন। একইসঙ্গে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালার হ্যারিসকে। নতুন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর নাম সামনে আসতেই পাল্টে যেতে শুরু করে দৃশ্যপট। ডেমোক্র্যাট শিবিরে শুরু হয় সমর্থনের জোয়ার।

ডেমোক্র্যাট শিবির থেকে প্রার্থিতা চূড়ান্ত হওয়ায় এই মুহূর্তে কামালা-ট্রাম্পের নির্বাচনী লড়াই চূড়ান্ত। এ অবস্থায় কামালাকে ঘায়েল করতে তাকে একের পর এক তীরবিদ্ধ করছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবুও জনগণের ওপর আস্থা রেখে বেশ ফুরফুরে মেজাজেই এগিয়ে যাচ্ছেন হ্যারিস।

এই যখন অবস্থা তখন স্বভাবতই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নির্বাচনে লড়তে কতটা প্রস্তুত কামালা হ্যারিস। ট্রাম্পের বিস্ফোরক মন্তব্যকে পাশ কাটিয়ে ৫ নভেম্বরের নির্বাচনে আদৌ তিনি জয়ী হতে পারবেন কিনা তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। এমনকি ট্রাম্পকে চ্যালেঞ্জ জানাতে ঠিক কোন বিষয়গুলোকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন হ্যারিস, তার সমীকরণ মেলাতেও ব্যস্ত বিশ্লেষকরা।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে লড়তে যে বিষয়টি হ্যারিসকে সবার চেয়ে এগিয়ে রাখতে তা হলো তার বয়স। মূলত বয়সের কারণেই সাম্প্রতিক নানা প্রচারণায় বাইডেনকে বিভিন্নভাবে কটাক্ষ করতে দেখা গেছে ট্রাম্পকে। তবে, বাইডেন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোয়, উল্টো এবার ট্রাম্পের বয়সকেই হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন হ্যারিস।

এছাড়াও জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে, সাম্প্রতিক সময়ে যেসব কৃষ্ণাঙ্গ ভোটার বাইডেনের কাছ থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন তারাও এবার কামালার উপর আস্থা রাখবেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ হ্যারিস নিজেও কৃষ্ণাঙ্গ। এছাড়াও গর্ভপাত ইস্যুতে কামালা হ্যারিসের সমর্থন ডেমোক্র্যাট শিবিরের পক্ষে ইতিবাচক সারা জাগাচ্ছে।

এছাড়াও, আরও যে বিষয়টি হ্যারিসকে ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে রেখেছে তা হলো, রিপাবলিকানদের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহ করেছেন কামালা। অন্যদিকে মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার মাসে তহবিল সংগ্রহে খুব একটা চমক দেখাতে পারেননি ট্রাম্প। তবে রাজনীতির মাঠে কামালা হ্যারিসের চেয়ে ট্রাম্প যে পাকা খেলোয়াড় তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

এই যখন অবস্থা, তখন পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে কর ও জ্বালানি তেলের ব্যয় কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনসমর্থন বাড়ানোর চেষ্টা করছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু তাই নয়, বাইডেনের আমলে দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও অভিবাসন নীতি যে ঝুঁকিতে পড়েছে তা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে টেনে তোলারও আশ্বাস দিচ্ছেন তিনি। এমনকি নির্বাচনে জয়ের জন্য গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন থেকে শুরু করে চলমান মধ্যপ্রাচ্য উত্তেজনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকেও ট্রাম্প অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন বলে আভাস মিলছে।

tech