বিদেশে এখন
0

হামাস নির্মূলে প্রতিরক্ষা বাহিনীকে চূড়ান্ত অভিযান অনুমোদন দেবেন ট্রাম্প!

কাতারের রাজধানী দোহায় চলছে হামাস-ইসরাইল যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় আলোচনা। মধ্যস্থতাকারীদের কাছে এর মধ্যেই একটি প্রস্তাব জমা দিয়েছে ইসরাইল। আলোচনায় অগ্রগতির কথা জানিয়েছে হামাসও। এর মধ্যেই হোয়াইট হাউসে না বসতেই গাজা ইস্যুতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন নবনির্বাচিত মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স। হুমকি দিয়েছেন, ২০ জানুয়ারির মধ্যে ইসরাইলি বন্দিদের মুক্তি না দিলে হামাস নির্মূলে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীকে চূড়ান্ত অভিযানের অনুমতি দেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমন অবস্থায় ক্ষমতা ছাড়ার আগে গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকরে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথা বলেছেন বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

ইসরাইলি আগ্রাসনে পুরো গাজা উপত্যকার পরিস্থিতি দিনদিন চরম ভয়াবহতার দিকে যাচ্ছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্য বলছে, উত্তর গাজা অবরুদ্ধ করে রেখে মাত্র একশ' দিনে এখানকার ৫ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা আর গুম করেছে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। বর্বরোচিত এই বিষয়টি সামনে আসার পর ক্ষমতা ছাড়ার আগেই অবিলম্বে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনালাপ হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের। ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার আগেই যুদ্ধবিরতির জন্য ইসরাইলকে ক্রমাগত চাপ দিচ্ছে বাইডেন প্রশাসন।

এমন অবস্থায় ট্রাম্পের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোন মন্তব্য না করলেও বলেছেন, যদি ২০ জানুয়ারির মধ্যে বন্দিদের মুক্তি দেয়া না হয়, সেক্ষেত্রে হামাস নির্মূলে ইসরাইলি বাহিনীকে চূড়ান্ত অভিযান পরিচালনার অনুমতি দেবেন ট্রাম্প। যদিও যুদ্ধবিরতি আর বন্দি বিনিময় নিয়ে কাতারের রাজধানী দোহায় চলছে বৈঠক। এতে অংশ নিয়েছেন ইসরাইল আর হামাসের প্রতিনিধিদল। হামাস বলছে, বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর সম্মতি পেলে যুদ্ধবিরতি চুক্তি খুব বেশি দূরে না।

জানা গেছে, দুই ধাপে করা হয়েছে প্রস্তাব। প্রথম ধাপে হামাস কয়েকজন ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তি দেবে, এরমধ্যে থাকবে নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা। বিনিময়ে ইসরাইল মুক্ত করবে ফিলিস্তিনি বন্দিদের। পাশাপাশি গাজার অনেক স্থান থেকে সেনা প্রত্যাহারও করে নেবে তেল আবিব। দ্বিতীয় ধাপে আসবে সীমান্ত ইস্যু, যেখানে ইসরাইলকে পুরোপুরি গাজা উপত্যকা থেকে সেনা সরিয়ে নিতে হবে। গাজা পুনর্গঠনে সহযোগিতা করতে হবে।

এদিকে, যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যেও থেমে নেই গাজায় ইসরাইলি বর্বরতা। রোববার (১২ জানুয়ারি) একদিনেই নতুন করে প্রাণ গেছে ২৮ ফিলিস্তিনির। ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী জানায়, গাজার উত্তরাঞ্চলে সশস্ত্র বাহিনীর সামরিক স্থাপনা ঘিরে চলছে অভিযান। ইয়েমেন আর লেবাননের সশস্ত্র যোদ্ধাদের লক্ষ্য করেও চলছে আইডিএফের হামলা। হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের মধ্যেই সিরিয়া-লেবানন সীমান্তে অস্ত্র সরবরাহের অবৈধ রুট রয়েছে দাবি করে হামলা চালিয়েছে আইডিএফ। ইসরাইল বলছে, যুদ্ধবিরতির মধ্যে হিজবুল্লাহ যেন নতুন করে সংগঠিত হতে না পারে, সেই পথ বন্ধ করতে তাদের সামরিক স্থাপনায় হামলা হচ্ছে। একই সময়ে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ছোড়া ড্রোন ভূপাতিত করার দাবিও করেছেন আইডিএফ।

এদিকে, গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে চটে গিয়ে তেল আবিবের বিরুদ্ধে লড়তে একের পর এক পদক্ষেপ নিয়ে যাচ্ছে ইরান। সপ্তাহব্যাপী চলছে ইরানের প্রতিরক্ষা মহড়া। চলছে নতুন ড্রোন আর ক্ষেপণাস্ত্রের প্রদর্শনী। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এখান থেকেই হিজবুল্লাহ আর হুতিদের রসদ সরবরাহ করবে তেহরান। যদিও ইরান বারবারই বলে আসছে, ইসরাইলে হামলার জন্য তাদের কারো সহযোগিতার প্রয়োজন নেই।

ইএ