ইহুদিবিদ্বেষ হলো একটি নির্দিষ্ট ধারণা যা ইহুদিদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশে ব্যবহার করা হতে পারে। কিন্তু ইসরাইল রাষ্ট্রকে আক্রমণ করে কিছু বলাও কি ইহুদিবিদ্বেষ? উত্তর না হবার কথা থাকলেও, দেশটির সঙ্গে ইহুদিদের সংযোগ বিবেচনা করে এমনটিই মনে করেন কেউ কেউ, যার তালিকায় ইসরাইলের পরেই হয়তো এগিয়ে আছেন মার্কিন শাসকরা।
আর তাই তো, নাগরিক স্বাধীনতা গোষ্ঠীগুলোর বাধার মুখেও মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে পাস হলো ইহুদিবিদ্বেষের বিরুদ্ধে একটি বিতর্কিত বিল।
যেখানে ১৯৬৪ সালের ইন্টারন্যাশনাল হলোকস্ট রিমেমব্র্যান্স অ্যালায়েন্সের ইহুদিবিদ্বেষের সংজ্ঞা লিপিবদ্ধ করা হয়। এর ফলে ইসরাইল রাষ্ট্রের বিরোধীতাও ইহদিবিদ্বেষ হিসেবে বিবেচিত হবে। বিলটির পক্ষে ৩২০ জন এবং বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ৯১ জন সদস্য। এখন অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে।
সিনেটে পাস হওয়ার পর বিলটি আইনে পরিণত হলে, যেসব কর্মকাণ্ড ইহুদিদের বিরুদ্ধে ঘৃণা বা বিদ্বেষ তৈরি করতে পারে, তা নিষিদ্ধ থাকবে। এছাড়া, ইহুদিবিদ্বেষের চর্চার অভিযোগে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলও বন্ধ করে দিতে পারবে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় শিক্ষা বিভাগ। বিলটি এমন সময়ে পাস হলো, যখন দেশটির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরাইল বিরোধী বিক্ষোভ চলছে।
সমালোচকেরা বলছেন, ইহুদিবিদ্বেষের সংজ্ঞাকে চলমান ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভ দমনে ব্যবহার করতে চাচ্ছে মার্কিন প্রশাসন। চরম সমালোচনার মুখেও ইসরাইলকে সমর্থন জুগিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাপ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের স্পিকার মাইক জনসন বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ে যা হচ্ছে তা বিপজ্জনক। এটি স্বাধীন মত প্রকাশের মাধ্যম নয়। ইহুদি শিক্ষার্থীরা ভয়ে আছে, তারা ক্যাম্পাসে আসতে পারছে না, পরীক্ষা ও পড়াশোনা করতে পারছে না। প্রত্যেকের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলছে। এটি কাম্য নয়।'
বিক্ষোভকারীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যেন ইসরাইলকে বর্জন করে। এছাড়া গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর চলমান সামরিক অভিযান অবিলম্বে বন্ধের জোরালো দাবি জানায় তারা। মার্কিন পার্লামেন্টের অনেক সদস্যের মতে, শিক্ষার্থীদের এসব আন্দোলন ইহুদিবিদ্বেষের সামিল।