ঘূর্ণিঝড় ‘বায়রনে’ বিপর্যস্ত দেড় লাখ ফিলিস্তিনি, শিশুসহ মৃত্যু ১০ জনের

ফিলিস্তিনে ঘূর্ণিঝড় 'বায়রন'
ফিলিস্তিনে ঘূর্ণিঝড় 'বায়রন' | ছবি: সংগৃহীত
0

শীতকালীন প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘বায়রনের’ প্রভাবে বিপর্যস্ত দেড় লাখ ফিলিস্তিনির জীবন। এরইমধ্যে ঝড়ের প্রভাবে গত ২৪ ঘণ্টায় উপত্যকাটিতে মৃত্যু হয়েছে দুই শিশুসহ অন্তত ১০ জনের। আবহাওয়ার প্রতিকূলতায় মানবেতর জীবন পাড় করছেন গাজাবাসী। এ পরিস্থিতিতে প্রায় আট লাখ ফিলিস্তিনি বন্যার কবলে পড়তে পারে বলে শঙ্কা জানিয়েছে জাতিসংঘ।

আহাজারি করছেন মা হেজার আবু জাজার। আট মাস বয়সী মেয়ে রাহাফ আবু জাজারের এমন চলে যাওয়া, যেন মেনে নিতে পারছেন না, খান ইউনিসের এ তাঁবুবাসী।

কাঁদতে কাঁদতে ফুটফুটে মৃত সন্তানকে জড়িয়ে ধরে মা বলেন, তার মেয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলো, ঘুমোতে যাওয়ার আগে তাকে খাইয়ে ঘুমিয়েছেন।

হেজার আবু জাজার বলেন, ‘আমরা যখন ঘুম থেকে উঠি, দেখি তার উপর বৃষ্টির পানি এবং বাতাস বইছে, ঠান্ডায় আমার মেয়েটি আর নেই।’

গাজার বাস্তুচ্যুত তাঁবুবাসীদের চিত্র এখন এমনই। তীব্র শীতের মাঝে ঝড় বায়রনের আঘাতে বিধ্বস্ত গাজাবাসী। একদিকে দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর লাগাতার হামলা, অন্যদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের আঘাতে বিপর্যস্ত শত শত তাঁবুবাসী।

আরও পড়ুন:

টানা বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত উপত্যকাটির অনেক রাস্তাঘাট ও তাঁবুবাসীদের এলাকা। রাতভর বৃষ্টি আর ঠান্ডায় প্রাণ গেছে রাহাফের মত দুই শিশুসহ অন্তত ১০ জনের। ঝড় বায়রনের তান্ডবে কয়েকটি ভবনও ধসে পড়েছে। অথচ অস্থায়ী তাঁবুগুলো ঝড়-বৃষ্টির কারণে নিরাপদ নয় বলে মানুষগুলো আশ্রয় নিচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্ত ওই ভবনগুলোতেই।

এদিকে জাতিসংঘ সতর্ক করেছে, প্রায় আট লাখ ৫০ হাজার লোকের আবাসস্থলের ৭৬১টি শরণার্থী শিবির বন্যার সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কায় হাজার হাজার মানুষ স্থানান্তরিত হয়েছে।

জাতিসংঘ এবং ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রায় ১৫ লাখ গাজাবাসী এখনও বাস্তুচ্যুত হওয়ার জন্য কমপক্ষে ৩ লাখ নতুন তাঁবু জরুরিভাবে প্রয়োজন। বিদ্যমান বেশিরভাগ আশ্রয়কেন্দ্র জীর্ণ বা পাতলা প্লাস্টিক এবং কাপড়ের চাদর দিয়ে তৈরি।

যদিও অক্টোবর থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে, গাজাবাসীর ওপর ইসরাইলি আগ্রাসন চলমান। যুদ্ধ গাজার বেশিরভাগ অবকাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছে, যে কারণে জীবনযাত্রার অবস্থা হয়ে পড়েছে ভয়াবহ।

এসএস