গাজায় দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে ৯ বেকারিতে দিনে ৩ লাখ রুটি উৎপাদন

গাজার বেকারিতে তৈরি হচ্ছে রুটি
গাজার বেকারিতে তৈরি হচ্ছে রুটি | ছবি: রয়টার্স
1

দুর্ভিক্ষের লাগাম টানতে গাজা উপত্যকার নয়টি বেকারিতে প্রতিদিন তৈরি হচ্ছে তিন লাখ রুটি। তবে ক্ষুধার্ত গাজাবাসীর চাহিদার তুলনায় কম হওয়ায় উপত্যকা জুড়ে আরও ৩০টি বেকারি পুনরায় চালুর চেষ্টা করছে জাতিসংঘ। এদিকে ত্রাণ ঢুকলেও গাজা সিটি এবং উত্তরাঞ্চলে ত্রাণবাহী ট্রাক পৌঁছানো অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। অন্যদিকে মৃত্যুঝুঁকি কমাতে শিশুদের জন্য পুষ্টি সহায়তা বিতরণে অগ্রাধিকার দেয়ার আহ্বান ইউনিসেফের।

বেকারিতে রুটি তৈরির দৃশ্য গাজা উপত্যকার অন্যতম দুর্ভিক্ষের নগরী দেইর আল বালাহর। হামাস-ইসরাইলের অস্ত্রবিরতি শুরুর পর থেকে ত্রাণ ঢুকতে থাকায় জীবন্ত হয়ে উঠছে জাতিসংঘের বেকারিগুলো।

তাজা রুটির গন্ধ যেন ক্ষুধার্ত গাজাবাসীর মনে আশার আলো জাগাচ্ছে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি সংস্থা (ডব্লিউএফপি) জানিয়েছে, এরইমধ্যে নয়টি বেকারিও চালু করতে সক্ষম হয়েছে তারা। এসব বেকারিগুলোতে প্রতিদিন প্রায় তিন লাখ রুটি তৈরি হচ্ছে। যা চাহিদার তুলনা খুবই সামান্য।

এমন পরিস্থিতিতে উপত্যকাজুড়ে বন্ধ থাকা আরও ৩০টি বেকারি পুনরায় চালু করার চেষ্টা করছে জাতিসংঘ। অর্থাৎ অনাহারে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়া ফিলিস্তিনিদের রক্ষায় রীতিমতো যুদ্ধ শুরু করেছে সংস্থাটি।

জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল টম ফ্লেচার বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন ১০ লাখ খাবার সরবরাহ করতে চাই। আমরা এটি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এটি একটি অসাধারণ মুহূর্ত। কারণ গাজাবাসীর জন্য মানবিক সহায়তায় সবাই আবারও একত্রিত হচ্ছে।’

আরও পড়ুন:

ইসরাইলি অবরোধের কারণে কোনো ত্রাণবাহী ট্রাক ঢুকতে না পারায় এতদিন এসব বেকারি বন্ধ ছিলো। যার কারণে খাবারের অভাব চরম পর্যায় পৌঁছায়। ফলে গত আগস্টের শেষে গাজা সিটিসহ আশপাশের এলাকাগুলোকে দুর্ভিক্ষের নগরী হিসেবে ঘোষণা দেয় জাতিসংঘ।

ইসরাইলের দুই বছরের ভয়াবহ আগ্রাসন সাময়িকভাবে বন্ধের পর থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫৬০ টন খাবার ঢুকছে গাজা উপত্যকায়। তবে গাজা সিটি এবং উত্তরাঞ্চলে ত্রাণবাহী ট্রাক ঢোকা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। চাহিদা অনুযায়ী ত্রাণ ঢুকতে না পারায় দ্রুতই সবগুলো সীমান্ত খুলে দিতে ইসরাইলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির মুখপাত্র আবির এতেফা বলেন, ‘জাতিসংঘের সব অংশীদার এবং এনজিও পূর্ণ গতিতে কাজ করছে। আমরা যদি এভাবে কাজ এগিয়ে নিতে পারি, তাহলে দুর্ভিক্ষ থেকে গাজাবাসীকে ফিরিয়ে আনতে পারব। তবে এখনও গাজা সিটি এবং গাজার উত্তরে প্রবেশাধিকার অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং।’

এভাবে ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রাখা গেলে আগামী তিন মাসের মধ্যে ১৬ লাখ গাজাবাসীর কাছে খাদ্য সহায়তা পৌঁছানো সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। যুদ্ধবিরতির প্রথম ৬০ দিন ব্যাপকভাবে বাড়ানো হবে মানবিক সহায়তা। ৫০ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টির ঝুঁকিতে থাকায় পুষ্টি সহায়তা বিতরণকে অগ্রাধিকার দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ।

এসএস