গাজার খান ইউনিসে স্বজনদের মরদেহ শনাক্তে মরিয়া ফিলিস্তিনিরা। জিম্মি ও বন্দিবিনিময়ের অংশ হিসেবে এসব মরদেহ গাজায় ফিরিয়ে দেয় ইসরাইল। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে নিহত বিপুলসংখ্যক ফিলিস্তিনির মরদেহ নিজের কাছে রেখেছে ইসরাইল। দীর্ঘ সময় পর কিছু মরদেহ ফিরলেও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাবে পরিচয় শনাক্ত করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায়।
ফিলিস্তিনি চিকিৎসক আহমেদ তাহির বলেন, ‘মরদেহ চিহ্নিত ও পরিচয় শনাক্তের চেষ্টায় কোনো উপায় বাদ রাখিনি আমরা। কিন্তু এসব উপায় খুব প্রাথমিক। নিহতদের জীবিত আত্মীয়স্বজনদের ওপরই নির্ভর করতে হচ্ছে আমাদের। বৈজ্ঞানিক উপায়ে পরিচয় শনাক্ত করা যাচ্ছে না, কারণ আমাদের ডিএনএ প্রযুক্তি বা বিশেষ পরীক্ষানিরীক্ষা করার মতো গবেষণাগার বা সরঞ্জাম নেই।’
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ পর্যন্ত শতাধিক ফিলিস্তিনির মরদেহ ফিরিয়ে দিয়েছে ইসরাইল। এখনও ইসরাইলের হেফাজতে আছে অর্ধশতাধিক শিশুসহ ৭শ'র বেশি ফিলিস্তিনি বন্দির মরদেহ। ইসরাইলের বিরুদ্ধে গাজা কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, পদ্ধতিগত নির্যাতনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের হত্যা ও মরদেহ থেকে চোখ, কর্নিয়াসহ বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ চুরির। অভিযোগের বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি ইসরাইল। অঙ্গচুরি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের সুষ্ঠু তদন্ত এবং আন্তর্জাতিকভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখার দাবি ফিলিস্তিনিদের।
আরও পড়ুন:
স্থানীয়দের মধ্যে একজন বলেন, ‘শহিদদের মরদেহের যা অবস্থা, তাতে বোঝার উপায় নেই যে তারা আসলে কারা। পুরোপুরি বিকৃত হয়ে গেছে মরদেহগুলো। ইহুদিরা ভীষণ নির্যাতন করেছে তাদের। আমার স্বামীর পরিচয়ও জানতে পারছি না।’
অন্যদিকে অস্ত্রবিরতি কার্যকরের মধ্যে ত্রাণ নিয়ে শত শত ট্রাক গাজায় ঢুকলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা নিতান্তই অপ্রতুল। জরুরি খাদ্য সহায়তা থেকে বঞ্চিত ১০ লাখের বেশি নারী ও কিশোরী। তথ্য জাতিসংঘের। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি বলছে, দিনে ৫৬০ টন করে খাবার ঢুকছে অবরুদ্ধ উপত্যকায়, কিন্তু তাও দরকার আরও অনেক বেশি খাবার।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির মুখপাত্র আবির এতেফা বলেন, ‘১১ অক্টোবর গাজায় অস্ত্রবিরতি কার্যকরের পর থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত শুধু ২৮শ' টন খাদ্যবাহী প্রায় ২৩০টি ট্রাক ঢুকেছে গাজায়। গতকালও অনেক ট্রাক ঢুকেছে, কিন্তু পরের দিন দুপুরের আগ পর্যন্ত সঠিক সংখ্যাটা জানার উপায় নেই। বলা যায়, প্রতিদিন গড়ে ৫৬০ টন খাবার প্রবেশ করছে গাজায়। কিন্তু যা প্রয়োজন, তার চেয়ে অনেকটা পিছিয়ে আছি আমরা।’
এদিকে অস্ত্রবিরতির পরবর্তী ধাপে রোববার গাজা ও মিশর সীমান্তে রাফাহ নিরাপত্তা চৌকিও খুলে দিতে পারে ইসরাইল, জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।





