শুক্রবার ইসরাইলি হামলায় প্রাণ গেছে প্রায় ৭০ ফিলিস্তিনির

ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা
ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা | ছবি: সংগৃহীত
0

গাজায় মানবেতর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর আগ্রাসন। শুক্রবারও ইসরাইলি হামলায় প্রাণ গেছে প্রায় ৭০ ফিলিস্তিনির। শনিবারও প্রাণ গেছে ১৯ ফিলিস্তিনির। এরমধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে আগুন দেয়ায় পক্ষাঘাতগ্রস্ত এক শিশু পুড়ে মারা গেছে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি সতর্কবার্তা দিয়েছে, উপত্যকার হাজার হাজার মানুষ রয়েছে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে। গাজায় ভয়াবহ এই আগ্রাসনের কারণে ইসরাইলকে সন্ত্রাসী হিসেবে অভিহিত করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান।

ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে মরদেহ খুঁজছেন ফিলিস্তিনিরা। উপত্যকার উত্তরে বেইত লাহিয়াতে একটি হাসপাতালেও স্বজনের লাশ খোঁজ করছেন অনেকে। ইসরাইলের হামলায় শুক্রবার প্রাণ গেছে নিরস্ত্র অনেক ফিলিস্তিনির। গাজা উপত্যকার অন্তত ৪০টি টার্গেট লক্ষ্য করে হামলা হয়েছে এদিন। ইসরাইলের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব হামাস গ্রহণ না করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে গাজায় হামলা বাড়িয়ে দিয়েছে ইসরাইল। দক্ষিণে চলছে বিমান হামলা, উত্তরে পড়ছে আর্টিলারি।

স্থানীয়দের মধ্যে একজন বলেন, ‘সবাই ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ বিস্ফোরণ হলো। দেখলাম রাস্তার ওপর ছিন্নভিন্ন মানুষ পড়ে আছে। মানুষের দেহের অংশ খুঁজে পেলাম আমরা।’

অন্য একজন বলেন, ‘রাতে ঘুমিয়ে ছিলাম। প্রতিবেশীর বাড়িতে রকেট পড়লো। এরপর পুরো স্থাপনা ধসে পড়লো। অনেকেই ঘুমিয়ে ছিল। সেভাবেই মারা গেছে।’

এদিকে গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরাইলি হামলায় ধসে পড়েছে ভবন। দক্ষিণাঞ্চলের রাফা, গাজার উত্তরাঞ্চল এমনকি গাজা শহরের বড় এলাকাজুড়ে চলছে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর অভিযান। ১৮ জানুয়ারি প্রথম দফার যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে গাজায় আগ্রাসন বাড়িয়েছে আইডিএফ। মিশর চেষ্টা করছে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের। কিন্তু কোনোপক্ষই দাবি মেনে না নেয়ায় বারবারই পিছিয়ে পড়ছে যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় দফার চুক্তি।

এমন অবস্থায় ইসরাইলকে সন্ত্রাসী উল্লেখ করে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, আঞ্চলিক সংঘাত সমাধানে ইরান কাজ করছে। তেহরান সন্ত্রাসবাদের শিকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইহুদিবাদী এই ভূখণ্ড সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার, আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম দিয়েও নিজেদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে।

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন, ‘ইসরাইল সন্ত্রাসীদের মতো কাজ করছে। এই ভূখণ্ডের সবকিছুতে সন্ত্রাসবাদ। যা ইচ্ছা তাই করছে, কিন্তু বসে বসে মানবাধিকারের কথাও বলছে। আমরা কারো সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতে চাই না। বিশ্বে শান্তি আর নিরাপত্তা চাই।’

গাজায় দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর আগ্রাসন। দ্বিতীয় দফায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর না হওয়ায় গাজায় ত্রাণ সরবরাহের করিডোর বন্ধ করে দিয়েছে ইসরাইল। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি বলছে, শিগগিরই গাজায় হাজার হাজার মানুষ চরম দুর্ভিক্ষে পড়বে। চিকিৎসা সরঞ্জাম সংকটে চিকিৎসার অভাবে হাসপাতালেও প্রাণ ঝরছে শিশুদের।

এসএস