ইয়েমেনে এটা আমাদের চতুর্থ হামলা, যা এখনও শেষ হয়নি। যে শত্রু মোকাবিলা করতে হচ্ছে, তাতে এই হামলা যথেষ্ট নয়। তবে প্রতিবার শত্রুপক্ষকে আরও শক্তিশালী হামলা করছি।
ইয়েমেনে হামলার আগে এমনই নির্লিপ্তভাবে সেই কর্মপরিকল্পনার বর্ণনা দিয়ে যাচ্ছিলেন ইসরাইলি বিমান বাহিনীর কমান্ডার অফিসার। ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, প্রস্তুতি নিচ্ছে যুদ্ধবিমানের বহর। গাজা, লেবাননের পর গন্তব্য এবার ইয়েমেন। প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে এবার ইয়েমেনে হামলা করেছে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী।
ইয়েমেনের রাজধানীর সানার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হামলার পরবর্তী দৃশ্য এটি। হুড়োহুড়ি করে নিজের প্রাণ বাঁচাতে মরিয়া হয়ে ছুটোছুটি করছেন যাত্রীরা। ইরান সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা তেল আবিবে ড্রোন আর মিসাইল দিয়ে হামলা করলে এর জবাবে শুধু বিমানবন্দর নয়, আরও অনেক স্থাপনায় হামলা করেছে আইডিএফ। হামলার সময় এই বিমানবন্দরে অবস্থান করায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদ্রোস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিমানবন্দরের রানওয়ে। জাতিসংঘ বলছে, লোহিত সাগর আর সানা বিমানবন্দরে হামলার ঘটনা উদ্বেগজনক। ইয়েমেনে মানবিক সহায়তা দেয়া কঠিন হয়ে পড়বে। তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেস।
এদিকে, শুধু বিমানবন্দর নয়, হুতিদের সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা হয়েছে পশ্চিম উপকূলে হোদেইদাহ, সালিফ আর রাস কানাতিব সমুদ্রবন্দরে। এছাড়াও হেজাজ আর রাস কানাতিব জ্বালানি কেন্দ্রেও ভয়াবহ হামলা হয়েছে। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরাইলকে যারা আঘাত করবে, তাদের জন্য আঘাত অনিবার্য।
ইরানের প্রতিরোধ অক্ষকে শেষ করে দেয়া হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এদিকে, এই হামলার পরপরই ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে ইয়েমেন থেকে। মধ্যরাতে তেল আবিবে বেজে উঠেছে সাইরেন। হুতিদের পক্ষ থেকে ইসরাইলকে কড়া জবাবের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইরানও।
ইয়েমেনে হামলার মধ্যেই গাজার উত্তরে কামাল আদওয়ান হাসপাতালের কাছে ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। অর্ধ শতাধিক ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। তীব্র শীতে খোলা মাঠে টানিয়ে রাখা তাবুতে বেঁচে থাকাই কঠিন হয়ে পড়েছে গাজাবাসীর জন্য।