ঈদ উদযাপনের এ সময়টাতেও অসহায় গাজাবাসীকে নিস্তার দিচ্ছে না ইসরাইলি বাহিনী। স্থল অভিযান ও বিমান থেকে বোমাবর্ষণ অব্যাহত রেখে ধ্বংসস্তূপের নগরীতে থাকা বাসিন্দাদের ঈদ আনন্দটাও ছিনিয়ে নিয়েছে।
দুই মাসের যুদ্ধবিরতি শর্ত লঙ্ঘন করে ১৮ মার্চ থেকে গাজায় চালানো আগ্রাসনে এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির প্রাণ গেছে বলে নিশ্চিত করেছে গাজা-ভিত্তিক স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। গত ১০ দিনেই তিন শতাধীক শিশু নিহত ও ৬ শতাধীক আহতের তথ্য দিয়েছে ইউনিসেফ। শিশু মৃত্যুর হার বাড়তে থাকায় দ্রুত যুদ্ধবিরতি কার্যকরের আহ্বান জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শিশু বিষয়ক সংস্থাটির।
এখানেই শেষ না, মার্চের ২ তারিখ থেকে চলমান ইসরাইলি অবরোধে খাদ্য সামগ্রীসহ কোনোধরণের সহায়তা বোঝাই ট্রাক ঢুকতে পারছে না গাজায়। এ অবস্থায় বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি-ডব্লিউএফপি পরিচালিত ২৫টিসহ সব বেকারি বন্ধ হয়ে গেছে। চরম খাদ্য সংকটে হিমশিম খাচ্ছেন উপত্যকাটির বাসিন্দারা।
বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ থাকায় ময়দা, চিনি, লবণসহ জ্বালানি ফুরিয়ে আসায় বেকারিগুলো বন্ধ। এমন পরিস্থিতিতে বাসিন্দাদের জীবন অতিবাহিত করা খুব কঠিন।’
আরেকজন বলেন, ‘জ্বালানি নেই, খাদ্য নেই। সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ। গাজার পরিস্থিতি কঠিন। মানুষ খুব কষ্ট পাচ্ছে।’
এমন করুণ পরিস্থিতিতেও গাজায় প্রচুর খাবার আছে বলে দাবি ইসরাইলের। সাংবাদিকদের প্রশ্নের যবাবে ইসরাইলের এ দাবিকে হাস্যকর বলে মন্তব্য করলেন জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক।
জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, ‘এটা হাস্যকর। কারণ আমাদের মানবিক সহায়তা সরবরাহ প্রায় শেষ। ডব্লিউএফপি মজা করার জন্য বেকারি বন্ধ করে না। যদি ময়দা না থাকে, যদি রান্নার গ্যাস না থাকে, তাহলে বেকারিগুলো খুলে কি করবে।’
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরাইলি আগ্রাসনে গাজায় প্রাণহানি ৫০ হাজার ৪শ' ছাড়িয়েছে। আহত এক লাখ সাড়ে ১৪ হাজারের বেশি। এদিকে অধিকৃত পশ্চিম তীরেরও আক্রমণ চালাচ্ছে ইসরাইলি দখলদাররা। ঘটছে হতাহতের ঘটনা।