স্বৈরশাসক আসাদ সরকারের কাছ থেকে সিরিয়াকে মুক্ত করতে না করতেই অবরুদ্ধ গোলান মালভূমি পুরোটা দখলে নিতে যেন উঠে পড়ে লেগেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু। হঠাৎ করেই অবরুদ্ধ গোলান মালভূমিতে ইসরাইলি বসতি দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা করছে তেল আবিব। পাশাপাশি সীমান্তে যেকোনো হামলা ঠেকাতে নিরাপত্তা বাড়াবেন নেতানিয়াহু।
কৌশলগত এই ভূখণ্ডের অনেকাংশই ইসরাইলের দখলে। সিরিয়া থেকে বারবারই সেনা সরিয়ে নেয়ার কথা বলা হলেও পাত্তা দেয়নি ইসরাইল। সিরিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠী হায়াত তাহরীর আল শামের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর গোলান মালভূমিতে বসতি স্থাপনে এক কোটি ডলারের বেশি বরাদ্দ করেছে সরকার। আপাতত গোলানে বসতি রয়েছে ৩১ হাজার ইসরাইলির। যদিও এই সিদ্ধান্তের ঘোর বিরোধিতা করছে ইরাক, সৌদি আরব আর সংযুক্ত আরব আমিরাত। অন্যদিকে নেতানিয়াহু প্রশাসন বারবারই বলে আসছেন সিরিয়ার সঙ্গে সংঘাতে জড়ানোর কোনো উদ্দেশ্য নেই ইসরাইলের। নিজ দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রস্তুতি রাখতে হচ্ছে।
স্বৈরশাসক ক্ষমতাচ্যুত হলেও সিরিয়া পুরোপুরি বিপর্যস্ত। এর মধ্যে নিরাপদ নয় সীমান্তগুলো। যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া পুনর্গঠনে প্রয়োজন আন্তর্জাতিক সহায়তা। দেশটির জন্য পাঁচ কোটি ডলার সহায়তার ঘোষণা করেছে ব্রিটেন। এরমধ্যে জরুরি ভিত্তিতে তিন কোটি ডলার দেয় হবে দেশের মানুষের খাবার, চিকিৎসার জন্য। তবে আল কায়েদা থেকে ভেঙে হায়াত তাহরীর আল শামের উত্থানের কারণে এই সশস্ত্র গোষ্ঠীকে ভরসা করতে পারছে না পশ্চিমারা।
জাতিসংঘ বলছে, সিরিয়ার ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিতে কাজ করছে তারা। পাশাপাশি মানবাধিকার লঙ্ঘনের অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনতে সিরিয়ার বর্তমান সরকারকে সহযোগিতা করবে জাতিসংঘ, এমনটাই জানিয়েছেন জাতিসংঘে সিরিয়ার রাষ্ট্রদূত গিয়ার পেডেরসন। তবে এইচটিএস কি করছে, সেটাও গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবে জাতিসংঘ। এদিকে গিয়ার পিডারসনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন হায়াত তাহরীর আল শামের নেতা আবু মোহাম্মদ আল জুলানি।
কিন্তু দেশ স্বৈরশাসনমুক্ত হলেও এখনও আসাদ পরিবারের প্রতি জনরোষ এতটুকুও কমেনি। সরকারকে গদিছাড়া করার পর এখনও বিভিন্ন স্থানে তার বাবা হাফেজ আল আসাদের ভাস্কর্য নামিয়ে ফেলছে।