সাময়িক যুদ্ধবিরতির পরপরই মধ্য গাজার দেইর আল বালাহতে আরও একবার হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। উপত্যকার মূল ভূখণ্ডসহ অধিকৃত পশ্চিমতীরের শরণার্থী শিবিরগুলোতে পুরোদমে চলছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর আগ্রাসন। বাদ যাচ্ছে না আশ্রয়কেন্দ্রগুলো। এরমধ্যেই গাজায় চতুর্থ দিনের মতো চলছে পোলিও টিকাদান কর্মসূচি।
যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে কোনো অগ্রগতি না থাকায় হামাসের হাতে প্রাণ গেছে ছয় ইসরাইলি বন্দির। এই ছয় বন্দিকে হত্যার প্রতিবাদে নেতানিয়াহুর পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল গোটা ইসরাইল। এতদিন থেমে থেমে বিক্ষোভ চললেও বন্দিদের উদ্ধারে সরকারের বিরুদ্ধে পুরোপুরি ব্যর্থতার অভিযোগ এনে যুদ্ধবিরতির দাবিতে তেল আবিবে বিক্ষোভ করছেন লাখ লাখ সাধারণ ইসরাইলি।
রাজনীতিতে প্রতিপক্ষরাও এবার চড়াও হয়েছেন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে। সাবেক ক্যাবিনেট সদস্য ও নীতিনির্ধারক বেনি গ্যান্তজ বলেছেন, যেকোনো মূল্যে বন্দিদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা উচিত নেতানিয়াহুর। যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে নেতানিয়াহুই প্রধান বাধা বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এমন পরিস্থিতিতে হতাশা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রও। এদিকে, গেলো ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলা ইস্যুতে সশস্ত্র গোষ্ঠীটির নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করেছে ওয়াশিংটন। মার্কিন বিচার দফতর জানায়, মার্কিন নাগরিকদের হত্যা, অস্ত্রের ধ্বংসাত্মক ব্যবহারসহ আরও কিছু অভিযোগ আনা হয়েছে হামাসের বিরুদ্ধে। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, হামলার পাশাপাশি বেসামরিক নাগরিক হত্যা ও তাদের বন্দি করার বিষয়ে পুরোপুরি সম্মতি ছিল হামাস নেতাদের।
তবে, উপত্যকায় যুদ্ধ চললেও কোনো পক্ষের অগ্রগতি কোথায়, তা নিয়ে নেই সুনির্দিষ্ট তথ্য। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরাইলি সেনারা জোর তৎপরতা চালালেও সেখানে বাড়ছে হামাস যোদ্ধাদের উপস্থিতি। ইসরাইলি গণমাধ্যম বলছে, হামাসে নতুন করে যুক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার নতুন সদস্য।
যদিও গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরের চেষ্টা এখনও করে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, সামনের দিনগুলোতে যুদ্ধবিরতি নিয়ে হতে পারে চূড়ান্ত চুক্তি।
উপত্যকাটিতে যুদ্ধবিরতি কার্যকরে কোনো পদক্ষেপ না নেয়ার পাশাপাশি বন্দিদের মুক্ত করা নিয়েও কোনো তৎপরতা নেই নেতানিয়াহু প্রশাসনের। এমন অবস্থায় মিশর সংলগ্ন ফিলাডেলফি করিডোর থেকে সেনা সরিয়ে নেয়ার কোনো পরিকল্পনা নেতানিয়াহু প্রশাসনের না থাকলেও যুক্তরাষ্ট্র বলছে, বন্দি বিনিময় চুক্তির অংশ হিসেবে এই সীমান্ত থেকে শর্তসাপেক্ষে সেনা সরিয়ে নেবে ইসরাইলি সেনাবাহিনী।