যুদ্ধ , মধ্যপ্রাচ্য
বিদেশে এখন
0

হানিয়ার মৃত্যুর দায় অস্বীকার ইসরাইলের, সাক্ষ্য দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

হামাস নেতা হানিয়ার মৃত্যুতে ফুঁসে উঠছে মধ্যপ্রাচ্য। প্রতিবাদ ও বিক্ষোভে নেমেছে তুর্কিয়ে, লেবানন, তিউনিশিয়াসহ মধ্যেপ্রাচ্যের অনেক দেশ। এদিকে হানিয়ার মৃত্যুর জন্য ইসরাইলকে দায়ী করলেও তা অস্বীকার করছে দেশটি। যুক্তরাষ্ট্রও বলছে তারা এই হত্যাকাণ্ডের জড়িত না।

গাজার যুদ্ধ ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ছে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে। ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের ব্যবধানে হামস প্রধান ইসমাইল হানিয়া ও হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডার ফুয়াদ শোকরের মৃত্যুতে ফুঁসছে মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশ। ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধের আগুনে জ্বলছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসসহ তুর্কিয়ে ও ইরান।

তুর্কিয়ের ইস্তাম্বুলে রাস্তায় নেমেছে হাজার হাজার ফিলিস্তিনিপন্থী বিক্ষোভকারী। হানিয়ার ছবি, ব্যানার ও পতাকা হাতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা। ইসরাইলকে কঠোর শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানায় বিক্ষোভকারীরা। হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে তুর্কিয়ে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেন, 'হানিয়াকে হত্যা করে ফিলিস্তিনিদের দমানো যাবে না।'

বিক্ষোভকারীরা বলেন, তুরস্কের উচিত ইসরাইলের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করা। তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা। ইসরাইল যুদ্ধকে আরও প্রসারিত করার চেষ্টা করছে। এর পেছনে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের হাত আছে। মুসলিম বিশ্বের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এটি জঘন্য হামলা। ইসলামি দেশগুলোর ব্যর্থতা প্রমাণ করে। মুসলিম দেশগুলো এক হলে যেকোনো শত্রুকে মোকাবিলা করা সম্ভব।

হানিয়ার হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভে নামে তিউনিশিয়ার শত শত মানুষ। এসময় তারা ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে ইসরাইল বিরোধী স্লোগান দিতে থাকে। এদিকে হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডার ফুয়াদ শোকর ও হামাস নেতা হানিয়ার মৃত্যুতে বিক্ষোভ হয়েছে লেবাননে। তাদের অভিযোগ এই দুই নেতার হত্যাকাণ্ডের পেছনে ইসরাইলের হাত আছে।

হামাসের দাবি, ইসরাইল রাষ্ট্রের কট্টর সমর্থক জায়নবাদীরা হানিয়ার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। হামাসের ডেপুটি চিফ প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, হানিয়ার ঘরে ক্ষেপণাস্ত্রটি সরাসরি আঘাত হানে।

হামাসের উপপ্রধান খলিল আল-হাইয়া বলেন, হানিয়া যে ঘরে ছিল সেখানে ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হানে। তার ঘরের জানালা ও দেয়াল পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে বিবরণ নিয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশের অপেক্ষায় আছি। ইতিমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে।'

সবার অভিযোগের তীর ইসরাইলের দিকে। ইসরাইল সরকারের মুখপাত্র ডেভিড মেনসার জানান, হানিয়ার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তারা জড়িত নয়।

তিনি বলেন, 'হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডার ফুয়াদ শোকরকে টার্গেট বৈরুতে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। তবে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়াকে লক্ষ্য করে ইরানে কোনো হামলা চালায়নি ইসরাইলি বাহিনী। হানিয়ার মৃত্যুর বিষয়ে আমাদের কাছে তথ্য নেই। এ নিয়ে ইসরাইল মন্তব্য করতে রাজি না।'

এই ঘটনার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা নেই বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।

তিনি বলেন, 'হানিয়ার হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো তথ্য ছিল না। তার হত্যার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো হাত নেই। তবে এ ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যকে আরও অস্থির করে তুলবে। যুদ্ধবিরতি ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।'

এদিকে গত মঙ্গলবার হিজবুল্লাহ নেতা ফুয়াদ শোকরকে লক্ষ্য করে লেবাননে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী। তার মরদেহ রাজধানী বৈরুতে একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করে হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী। তবে এখনই ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়াতে রাজি না লেবানন।