হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা যত কমেছে, ততই ইসরাইলের সঙ্গে হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর যুদ্ধের ঝুঁকি বাড়ছে। গাজায় ইসরাইলি হামলার শুরু থেকেই ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়িয়েছে হিজবুল্লাহ। গাজায় অভিযান বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত ইসরাইলে হামলা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় লেবাননের এই গোষ্ঠীটি।
সম্প্রতি ইসরাইলি বাহিনী ও হিজবুল্লাহ নেতাদের পাল্টাপাল্টি হুমকিতে বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইসরাইল যুদ্ধে জড়ালে ছেড়ে কথা বলবে না হিজবুল্লাহও। গোষ্ঠীর প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ বলেন, 'লেবানন সীমান্তে হামলা চালালে ইসরাইলের কোনও অংশ নিরাপদ থাকবে না। এমনকি সাইপ্রাস ও অন্যান্য ভূমধ্যসাগরীয় এলাকাও ঝুঁকিতে থাকবে।'
তিনি আরও বলেন, 'ইসরাইল যদি লেবাননের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়, তাহলে হিজবুল্লাহও বসে থাকবে না। কোনো নিয়ম, বাঁধা বা সমঝোতার পথেও হাঁটবে না হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী। নিজেদের রক্ষায় ইসরাইলে পাল্টা হামলা চালানো হবে।'
যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্যমতে, হিজবুল্লাহর সঙ্গে পুরোদমে যুদ্ধ বেঁধে গেলে ঝুঁকির মুখে পড়বে ইসরাইল। এমনকি ইসরাইলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ অংশ আয়রন ডোম ব্যর্থ হবে তাদের ঠেকাতে। ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহর হাতে অস্ত্রের বড় মজুত আছে। এরইমধ্যে ইসরাইলের আয়রন ডোমে ড্রোন হামলা চালানোর একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে হিজবুল্লাহ।
হামাস বা ইসলামিক জিহাদ থেকে হিজবুল্লাহ অনেক বেশি শক্তিশালী। তাদের কাছে ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন, রকেট আছে প্রায় দেড় লাখ। যার বেশিরভাগ ইসরাইলের ভেতরে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।
এদিকে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করেছেন, লেবাননকে আরও একটি গাজায় পরিণত হতে দেয়া যাবে না। ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা নিয়ে গভীরভাবে উদ্বেগ জানিয়েছে সংস্থাটি।
তিনি বলেন, 'দুই পক্ষকে অবশ্যই নিরাপত্তা পরিষদের শর্ত মানতে হবে এবং অবিলম্বে শত্রুতা বন্ধ করে শান্তির পথে আসতে হবে। কোনোভাবেই বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করা উচিত নয়। এসব সমস্যার কোনো সামরিক সমাধান নেই।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরাইল ও হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী উভয় পক্ষের জন্যই এই পরিস্থিতি বিপজ্জনক হতে পারে। ইসরাইল ও লেবানন সীমান্তে পাল্টাপাল্টি হামলা সংঘাতের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে।