কারও কথাই কানে তুলছে না ইসরাইল। ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের সব উদ্যোগ লোক দেখানো বলে অভিযোগ করেন অনেকেই। তবে গত কয়েক দিনে নানামুখী চাপে নির্বিচারে বেসামরিক নাগরিক হত্যা বন্ধে ইসরাইলকে বারবার সতর্ক করেছে ওয়াশিংটন। তাতেও কোনো কাজ হয়নি। গাজার দক্ষিণের শহর রাফায় বড় ধরনের স্থল অভিযান শুরুর পরিকল্পনা নেয় ইসরাইলি বাহিনী। সংবাদ মাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয় এ তথ্য।
এবার যুক্তরাষ্ট্র তাদের অস্ত্রের চালান বন্ধ করে দিয়ে ইসরাইলের বিরুদ্ধে মোক্ষম ব্যবস্থা নিয়েছে। গত সপ্তাহে দেশটিতে জাহাজে করে ২ হাজার পাউন্ড ওজনের কয়েক হাজার প্রাণঘাতি বোমার চালান পাঠানোর চুক্তি ছিল। রাফায় বেসামরিক মানুষের মানবিক চাহিদা নিয়ে উদ্বেগের জেরে সেই চালান বন্ধের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় ওয়াশিংটন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেন, 'বেসামরিক নাগরিকদের কথা বিবেচনা না করে রাফা অঞ্চলে ইসরাইলের হামলা চালানো উচিত নয়। বর্তমান পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে প্রাণঘাতি অস্ত্রের চালানটি বন্ধ করা হয়েছে। ইসরাইলকে আরও চিন্তাভাবনা করে যুদ্ধের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।'
যদিও হামাস নির্মূলে ইসরাইলকে শুরু থেকেই সমর্থন দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র । তবে গাজায় বেসামরিক মানুষ হত্যা ও মানবিক ত্রাণ সহায়তা পৌঁছতে না পারা নিয়ে উদ্বিগ্ন ওয়াশিংটন। রাফায় স্থল অভিযান চালালে সব ধরনের সহায়তা থেকে সরে আসারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।'
গাজার পরিস্থিতি নিয়ে ইসরাইলের ওপর চাপ তৈরির চেষ্টা করছে পুরো বিশ্ব। নিজ দেশেও চাপের মুখে নেতানিয়াহুর সরকার। জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে রাজধানী তেল আবিবের রাস্তায় নেমেছেন ইরাসরাইলি নারীরা।
স্থানীয় একজন নারী বলেন, 'প্রিয়জনদের ফিরে পেতে আমরা প্রতি মুহূর্তে আশায় আছি। যা অনেক সময় আমাদের খুব কঠিন পরীক্ষায় ফেলে দেয়। কিন্তু আমরা হাল ছাড়তে রাজি না। আমাদের প্রথম দাবি জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা। যুদ্ধবিরতি দিয়ে হোক বা চুক্তি করেই হোক সবার আগে বন্দিদের মুক্ত করতে হবে।'
৭ মাস ধরে চলা যুদ্ধে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা। এবার তাদের লক্ষ্য গাজায় মানবিক সহায়তা পাঠানোর একমাত্র পথ রাফা সীমান্ত ক্রসিং। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এতে ফিলিস্তিনিদের জীবন আরও ভয়াবহ হুমকির মুখে পড়বে। দেখা দেবে চরম মানবিক সংকট।