ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষকে কর রাজস্ব দিচ্ছে না ইসরাইল। ফলশ্রুতিতে কর্মীদের বেতন, সুবিধাভোগী আর অবসরপ্রাপ্তদের অর্থ দিতে পারছে না ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ। সাধারণ সময়ে কর রাজস্ব থেকে ১৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার পেতো ফিলিস্তিন, যা নভেম্বর থেকে পুরোপুরি বন্ধ।
গাজায় গেল ৭ অক্টোবর থেকে সেনা অভিযান শুরুর পর থেকে এই উপত্যকাকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছে ইসরাইল। অবরুদ্ধ এই অঞ্চল বিশ্ব বাণিজ্য থেকে এমনিতেই বিচ্ছিন্ন। দেশটির অর্থনীতি রাজস্ব আয়ে ভর করে চলতো। সংঘাত শুরুর পর থেকে নভেম্বরে এই অঞ্চলে কর রাজস্ব দেয়াও বন্ধ করে দিয়েছে তেল আবিব।
প্যালেস্টাইন লিবারেশন অথরিটির অর্থনৈতিক সম্পর্কের প্রোটোকল অনুযায়ী, সীমান্তে কর রাজস্ব ইসরাইল সংগ্রহ করলেও তা ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষকে স্থানান্তর করে দেয়া হতো। পাশাপাশি ফিলিস্তিনের আমদানি থেকে শুল্কও সংগ্রহ করে ইসরাইল। সাধারণ সময়ে কর রাজস্ব থেকে প্রতি মাসে ফিলিস্তিনের কাছে আসে ১৮ কোটি ডলারের ওপর, যা গেল ৩ মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ।
এর মধ্যে নরওয়ে ইসরাইল থেকে সংগ্রহ করা রাজস্ব ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষকে দেয়ার প্রক্রিয়া হাতে নেয়। কিন্তু এখনও তা আলোর মুখ দেখেনি। ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ বলছে, কর রাজস্বের সব অর্থ ইসরাইল রেখে দিয়েছে, কোন অর্থই ফিলিস্তিনের কাছে আসেনি। ২০২১ সালের অক্টোবরে কর্মী আর অবসরপ্রাপ্তরা শেষ পুরো বেতন আর পেনশন পেয়েছেন। এরপর থেকে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে মাঝে মাঝে বেতন পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। কিন্তু চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে তারা কোন ধরনের বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না।
এর মধ্যে ইসরাইলের অনৈতিকভাবে কর রাজস্ব কর্তনের কারণে ২০২১ সাল থেকে তো বেতনেও কাটছাঁট হয়েছে ফিলিস্তিনিদের। পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিরা ২০২১ সাল থেকে ৮০ শতাংশ বেতন পাচ্ছেন। সুবিধাভোগীরা গাজায় ইসরাইলের হামলা শুরুর পর থেকে ৬০ শতাংশ ভাতা পাচ্ছেন।
ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ বলছে, ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাসে ২৭ কোটি ডলারের বেতন বকেয়া পড়েছে। আড়াই লাখ সুবিধাভোগীর মধ্যে দেড় লাখের মতো কর্মক্ষম, বাকিরা অবসরপ্রাপ্ত, কারাদণ্ডপ্রাপ্ত কিংবা শহীদদের পরিবার।