চলতি মাসে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে পঞ্চমবারের মতো দায়িত্ব নিয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন। ধারণা করা হচ্ছিল, দায়িত্ব গ্রহণের পরেই ইউক্রেনের ওপর নতুন উদ্যমে হামলা চালাবে রুশ সেনাবাহিনী। ধারণাকে সত্যি প্রমাণ করে সমরাঙ্গনে কিয়েভের সেনাদের নাস্তানাবুদ করছে মস্কোর যোদ্ধারা। তবে একইসঙ্গে ঝড় উঠেছে রাশিয়ার সেনাবাহিনীতেও।
এক মাসের মধ্যে আটক করা হয়েছে রাশিয়ার ৪ শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাকে। সবার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে দুর্নীতির। প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে প্রভাবশালী সের্গেই শোইগুকে। হুট করে কেনো সামরিক বাহিনীর ওপর চটলেন পুতিন, তার বিশ্লেষণ প্রকাশ করা হয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এপিতে।
রুশ সামরিক বাহিনীতে দুর্নীতির অভিযোগ নতুন নয়। দেশটির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কাছে বিশ্বস্ততা প্রমাণের উপায় ঘুষ আদানপ্রদান। একইভাবে বাহিনীতে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমও এটি। অর্থাৎ পুরস্কার ও শাস্তি, উভয় ক্ষেত্রেই ভূমিকা রয়েছে ঘুষের। নিরাপত্তা বিশ্লেষক মার্ক গ্যালট্টির মতে, রুশ প্রেসিডেন্ট চান সামরিক বাহিনীতে সবারই কেলেঙ্কারি থাকুক। যাতে প্রয়োজনমাফিক নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে ব্যবহার করা যায়।
তাহলে হঠাৎ করেই কেনো উচ্চপদস্ত সেনা কর্মকর্তাদের ওপর চটলেন পুতিন? এর উত্তর আছে লুকিয়ে আছে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রদবদলের ঘটনায়। নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই বেলুওসোভ মূলত একজন অর্থনীতিবিদ। রাশিয়ার বর্তমান সামরিক বাজেট জিডিপির ৬.৭ শতাংশ যা স্নায়ু যুদ্ধের সময়েও এত বেশি অর্থ ব্যয় দেখা যায়নি। তবে এর মাধ্যমে লাভবান হচ্ছে দেশের অর্থনীতি। পুতিন চান দেশের অর্থনীতির জন্য যুদ্ধ চালিয়ে যেতে। তবে একইসঙ্গে প্রয়োজনের অতিরিক্ত দুর্নীতি ও ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান তিনি। এজন্য রদবদল হয়েছে প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয়ে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক স্যাম গ্রিনির দাবি, রুশ প্রেসিডেন্টের কাছে বিশ্বস্ততা প্রমাণের জন্য আরও কেলেঙ্কারি ফাঁস করবেন নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তবে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীতে যাতে বিষয়টি নেতিবাচক প্রভাব না ফেলে, সে বিষয়টি পর্যালোচনা করে চালানো হবে অভিযান।