তৃতীয় বছরে এসেও থামার লক্ষণ নেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এই সময়ে, রুশ বাহিনীকে হটাতে খুব বেশি সফলতা দেখাতে পারেনি জেলেনস্কির বাহিনী। উল্টো একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ শহরের দখল নিচ্ছে পুতিন বাহিনী। লড়াইয়ের নতুন ছকও কষছে মস্কো। এরমধ্যেই পারমাণবিক শক্তির ৯৫ শতাংশই আধুনিক অস্ত্রে সুসজ্জিত করার খবর দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বলেছেন, 'আধুনিক বিশ্বে অনেক উদ্বেগজনক চ্যালেঞ্জ ও ঝুঁকি রয়েছে। তাই সামরিক বাহিনীর শক্তি আধুনিকায়নের মাধ্যমে দেশের নিরাপত্তা জোরদার করাই আমাদের লক্ষ্য। বাস্তব যুদ্ধের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আধুনিক অস্ত্র সক্ষমতা আরও বাড়ানো হবে। ইতোমধ্যেই চলমান আধুনিকীকরণ প্রচেষ্টা সশস্ত্র বাহিনীকে অনেক বেশি শক্তিশালী করেছে।'
যুদ্ধক্ষেত্রে এমন টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা মিত্রদের সহায়তা প্রতিশ্রুত আটকে যাওয়ায় গোলাবারুদ সংকটে ভুগছে ইউক্রেন। বিষয়টি দুশ্চিন্তার হলেও, নিজেদের অস্ত্র সক্ষমতা নিয়ে নতুন বার্তা দিলেন দেশটির শিল্প মন্ত্রী ওলেকসান্দ্র কামিশিন। যেখানে তিনি বলেন, গত বছর অস্ত্র উৎপাদন সক্ষমতা তিনগুণ বাড়িয়েছে ইউক্রেন। এমনকি চলতি বছরও গোলাবারুদ উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে কিয়েভ। ২০২৪ সালে উৎপাদন সক্ষমতা আরও বাড়াতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রতিরক্ষা বাহিনী একযোগে কাজ করছে। ৫শ' প্রতিষ্ঠান অস্ত্র উৎপাদন ও মেরামতে কাজ করছে। যেখানে কর্মী সংখ্যা ৩ লাখ।
দুই বছরের যুদ্ধে ইউক্রেনে বেসামরিক ও সেনা সদস্য মিলিয়ে হতাহতের সঠিক পরিসংখ্যান এখনও জানা যায়নি। তবে এই সময়ের মধ্যে ৩১ হাজার ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। কিন্তু যুদ্ধের কৌশলগত কারণে আহতদের সংখ্যা জানানো হয়নি। রাশিয়াও এখন পর্যন্ত তাদের সামরিক ক্ষয়ক্ষতির কোনো পরিসংখ্যান তুলে ধরেনি। এরমধ্যেই আগমী মে মাসের শেষের দিকে রাশিয়ার নতুন মাত্রায় আক্রমণ প্রস্তুতি নিয়ে শঙ্কায় কিয়েভ। জেলেনস্কি বলেন, মে মাসের শেষের দিকে বড় ধরণের আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ নিতে পারে রাশিয়া। আমরাও তাদের প্রতিহতের জন্য প্রস্তুত আছি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ সহায়তা পেতে আগামী মাসের মধ্যেই কংগ্রেসের সমর্থন দরকার।
এদিকে নতুন করে যুদ্ধ উত্তেজনার মধ্যেই, শান্তি সম্মেলনের আভাস দিয়েছে ইউক্রেন। দেশটির প্রেসিডেন্টের চিফ অব স্টাফ আন্দ্রি ইয়ারমাক বলেছেন, ভলোদিমির জেলেনস্কি প্রস্তাবিত শান্তি আলোচনার ওপর একটি সম্মেলন আয়োজন করতে পারে সুইজারল্যান্ড। যেখানে রাশিয়াকেও আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে। তবে দু'দেশের মধ্যে শান্তি আলোচনার কোনও ভিত্তি নেই বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন।