ন্যাটোর আর্টিকেল ফাইভ সমমানের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চেয়েছেন জেলেনস্কি

ইশরাত এলিজা
ভলোদিমির জেলেনস্কি
ভলোদিমির জেলেনস্কি | ছবি: সংগৃহীত
0

রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধে এবার সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগদানের আশা ছাড়তে প্রস্তুত ইউক্রেন। তবে এ জন্য কিয়েভ-ওয়াশিংটন নিরাপত্তা চুক্তি ছাড়াও ন্যাটোর আর্টিকেল ফাইভ সমমানের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চেয়েছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। কিন্তু নিরাপত্তা নিশ্চয়তা সংক্রান্ত এই পদক্ষেপ নিয়ে সন্তুষ্ট নন কিয়েভবাসী। এমন আজ দ্বিতীয় ধাপে মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসবেন জেলেনস্কি।

আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষার নিশ্চয়তা পেতে ভলোদিমির জেলেনস্কি যখন ইউরোপ চষে বেড়াচ্ছেন, তখন ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে দখলদারিত্ব বাড়াচ্ছে রুশ সেনারা। রোববার জাপোরিঝিয়ায় কিয়েভ সেনাদের আরও একটি ঘাঁটি দখলে নিয়েছে মস্কো।

হামলা হয়েছে ইউক্রেনের জ্বালানি ও পরিবহন অবকাঠামো, ড্রোন উৎক্ষেপণ কেন্দ্রে। বন্দর নগরী ওডেসা ও এর আশপাশের এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে ১০ লাখেরও বেশি মানুষের। তবে একই দিনে রাশিয়ার একাধিক জ্বালানি স্থাপনায় আঘাত হেনেছে ইউক্রেনীয় যোদ্ধারা। মস্কোর অভিযোগ, সম্মুখ যুদ্ধে সুবিধা করতে না পারায় বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে হামলা করছে কিয়েভ।

যুদ্ধক্ষেত্রের যখন এই পরিস্থিতি তখন জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মার্জের আমন্ত্রণে বার্লিনে মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে চুক্তির খসড়া সংশোধনে ব্যস্ত ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং জামাতা জ্যারেড কুশনারের পাশাপাশি রোববারের এই বৈঠকে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে ছিলেন তার উপদেষ্টা দিমিত্রো লিটভিন।

ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি প্রস্তাব নিয়ে রোববার প্রায় ৫ ঘণ্টার দীর্ঘ বৈঠক শেষে জেলেনস্কি মন্তব্য করেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগদানের আকাঙ্ক্ষা ছাড়তে রাজি ইউক্রেন। তবে এ ক্ষেত্রে ন্যাটোর আর্টিকেল ফাইভ সমমানের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দিতে হবে কিয়েভকে। পাশাপাশি ইউক্রেনের সঙ্গে নিরাপত্তা চুক্তিতে থাকতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকেও।

আরও পড়ুন:

আর্টিকেল ফাইভ অনুযায়ী ন্যাটোর কোনো দেশের ওপর হামলা হলে তা জোটভুক্ত সব দেশের ওপর হামলা বলে বিবেচিত হবে। সম্মিলিতভাবেই এর প্রতিরোধ করা হবে। এসব দেশের স্থল, আকাশ এমনকি সাইবার হামলার ক্ষেত্রেও এটি সক্রিয় হতে পারে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, শুরু থেকেই ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগদান করতে আগ্রহী ছিল। এটাই ইউক্রেনের শর্ত ছিল, কিংবা বলা যা এটাই আমাদের অবস্থান। এর মূল কারণ নিরাপত্তা নিশ্চয়তা পাওয়া। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের কিছু অংশীজন এই বিষয়টি সমর্থন করেনি। এ কারণেই আজ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে নিরাপত্তা নিশ্চয়তার চুক্তি করার প্রস্তাব দিয়েছি।

তবে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের এমন কূটনৈতিক অবস্থানে আশ্বস্ত হতে পারছেন না কিয়েভবাসী। তারা মনে করেন, পশ্চিমাদের নিরাপত্তা নিশ্চয়তার ধরণ রাশিয়ার আগ্রাসন প্রতিহত করার মতো যথেষ্ট শক্তিশালী নয়।

কিয়েভবাসী বলেন, যে কোনো অবস্থাতেই নিরাপত্তা নিশ্চয়তা প্রয়োজন। কিন্তু অতীতে আমরা এমন চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছি। কোনো লাভ হয়েছে কী? আমি এই বিবৃতি সম্পর্ক জানি না। তবে ঘটনা সত্য হলে এটাকে কীভাবে দেখা উচিৎ? কাগজে কলমে অনেক কিছুই বলা হয়, কিন্তু তাতে কাজ হয় কী?

কিয়েভের এমন অবস্থান নিয়ে এখনও পর্যন্ত সরাসরি কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি মস্কো। তবে রুশ প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ রাশিয়ার গণমাধ্যম আরটিকে জানিয়েছেন, ক্রিমিয়া পুনর্দখল এবং সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগদান- দুটোর আশাই বাদ দিতে হবে ইউক্রেনকে।

ইএ