রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরুর পর ইউক্রেনকে নানাভাবে সামরিক সহযোগিতা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কিছু দেশ। পশ্চিমাদের সঙ্গে বিলিয়ন ডলারের অস্ত্রচুক্তিও করেছে দেশটি। টানা প্রায় দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধে ধীরে ধীরে কমতে থাকে সহায়তার পরিমাণ। চুক্তির অস্ত্র পেতেও অপেক্ষায় থাকতে হয় কিয়েভকে।
এমন বেকায়দার মধ্যে ফের সামনে আসলো দুর্নীতির খবর। ১ লাখ কামানের গোলাবারুদ কেনার কথা বলে লোপাট করা হয়েছে ৪ কোটি মার্কিন ডলার। ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থা এসবিইউ জানায়, ২০২২ সালের আগস্টে গোলাবারুদ কেনার চুক্তি করেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। অগ্রিম পরিশোধ করা অর্থের কিছু অংশ চলে যায় বিদেশি একাউন্টে। তবে, একটি গোলাও আসেনি ইউক্রেনে।
দুর্নীতির তদন্তে ইউক্রেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা ও অস্ত্র সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান লভিভ আর্সেনালের ম্যানেজারসহ পাঁচজনের নাম উঠে আসে। মূলত এসব কর্মকর্তারা যোগসাজশ করে এই অর্থ আত্মসাৎ করেন। পাঁচ সন্দেহভাজনকে নোটিশ দিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও অস্ত্র সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। এদের মধ্যে একজনকে ইউক্রেন ছেড়ে পালানোর অভিযোগে আটক করা হয়।
অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সামরিক ও প্রযুক্তিগত নীতি বিভাগের সাবেক ও বর্তমান প্রধান, অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম উন্নয়ন বিভাগের সাবেক প্রধান এবং লভিভ আর্সেনালের ম্যানেজার জড়িত আছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। এ ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হলে, তাদের কমপক্ষে ১২ বছর করে জেল হতে পারে।
দেশটির প্রসিকিউটর জেনারেল জানিয়েছেন, দুর্নীতির মাধ্যমে চুরি করা এসব অর্থ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। অর্থের পুরোটাই জমা দেয়া হবে প্রতিরক্ষা বাহিনীর ফান্ডে। দেশটির রাজনীতিবিদরা বলছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নে ইউক্রেনের যোগ দেয়ার পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়াতে পারে এই দুর্নীতি। তাছাড়া, জনগণের মধ্যেও দেখা দিতে পারে অসন্তোষ।
দুর্নীতির বিষয়টি এমন সময় সামনে আসলো যখন ঘনিষ্ঠ মিত্র প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইউক্রেনের নতুন সামরিক সহায়তা নিয়ে রিপাবলিকানদের সঙ্গে লড়াই করছেন। ২০১৯ সালে ক্ষমতায় এসে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছিলেন।