করোনা মহামারি বিপর্যস্ত করে দিয়ে গেছে পুরো বিশ্ব অর্থনীতিকে। সেই ধাক্কা সামলে না উঠতেই ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনা অভিযানে আবারও সংকটের মুখে পড়ে অর্থনীতি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ আর অর্থ সংকট কমাতে সুদের হার বাড়ানোর পাশাপাশি নানা পদক্ষেপ নেয় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নানা দেশ। ফলশ্রুতিতে এই অঞ্চলে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে জাতীয় ঋণের পরিমাণ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঋণ এখন টাইম বোমার মতো সতর্কবার্তা দিচ্ছে। ফ্রান্সের মোট ঋণ এখন ৩ লাখ কোটি ইউরো, ইতালিরও প্রায় ৩ লাখ কোটি ইউরো ঋণ। এই দুই দেশই ইউরোপে এখন সর্বোচ্চ ঋণগ্রস্ত। ইউরোপের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণের বোঝা নিয়ে তোপের মুখে থাকলেও সুদের হার বাড়ছেই।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, পরিস্থিতি এমন চলতে থাকলে ২০১০ সালে ইউরোজোন সংকটের চেয়ে কঠিন সংকটে পড়তে পারে ইউরোপ। কারণ বর্তমান সময়ের ঋণ আর স্বল্প সুবিধার কারণে অনেক দেশকেই কর হার বাড়ানো ও সরকারি খাতে ভর্তুকি কমানোর প্রয়োজন পড়ছে। সেক্ষেত্রে ২০২৪ সালে ইউরোপের অর্থনীতির জন্য অপেক্ষা করছে টাইম বোমা।
ইউরোপীয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক আছে দ্বিধাদ্বন্দ্বে। সুদের হার দ্রুতই কমিয়ে ফেললে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অনেক সময় লেগে যাবে। অন্যদিকে উচ্চ সুদহারের কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেক দেশ আটকে যাচ্ছে ঋণের জালে। সুদের হার স্বাভাবিক রাখতে নতুন করে ঋণ নিতে হচ্ছে। এই অঞ্চলের দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীরা চেষ্টা করে যাচ্ছে ঋণ সমস্যা সমাধানে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখন শুধু জাতীয় ঋণ নয় পুরো ব্লকের রেকর্ড ঋণ নিয়ে বিপাকে। ২০২৪ সাল ইইউ'র জন্য সংকটপূর্ণ বছর হতে যাচ্ছে। ঋণ সংকট, অর্থনৈতিক অস্থিরতা আর রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দীর্ঘমেয়াদে বিভিন্ন দেশে প্রভাব ফেলতে পারে।