যমুনা নদীর দূষণ রোধে কাজ করছেন স্বেচ্ছাসেবকরা

এশিয়া
বিদেশে এখন
0

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির বুক চিরে প্রবাহিত যমুনা নদীর দূষণ রোধের দায়িত্ব নিয়েছে একটি স্বেচ্ছাসেবক দল। নদীর কালিন্দি কুঞ্জ তীরের একটি অংশে প্রতিদিনই স্বেচ্ছাসেবকরা নিজ হাতে পরিষ্কার করছেন নদীর ময়লা-আবর্জনা। তাদের প্রচেষ্টায় ধীরে ধীরে চেহারা পাল্টাতে শুরু করেছে মৃতপ্রায় যমুনা নদীর।

ভারতে গঙ্গার পর দ্বিতীয় পবিত্র নদী হিসেবে বিবেচনা করা হয় যমুনা নদীকে। হিমালয় থেকে উৎপত্তি যমুনা নদী ১৩শ' কিলোমিটারের বেশি পথ পাড়ি দিয়ে মিলিত হয়েছে গঙ্গার সঙ্গে। তবে এটি ভারতের সবচেয়ে দূষিত নদীগুলোর একটি। অথচ তিন কোটির বেশি বাসিন্দার শহর দিল্লির পানি চাহিদার প্রায় ৭০ শতাংশ পূরণ করে যমুনা নদী।

যমুনা নদী মূলত দূষিত হচ্ছে মানুষ ও পশুর অপরিশোধিত বর্জ্যের কারণে। বিভিন্ন পরিবেশ সংস্থার তথ্য বলছে, প্রতিদিন প্রায় ৮০ কোটি লিটার অপরিশোধিত বর্জ্য যমুনার পানিতে মিশছে। দিল্লিতে ৩৫টির বেশি পয়ঃশোধানাগারও হিমশিম খাচ্ছে দূষণ রোধে। যমুনায় ৮৫ শতাংশের বেশি দূষণ আসে ঘরবাড়ির বর্জ্য, মানুষ ও গবাদিপশুর মলমূত্র থেকে।

দূষিত এই নদী পরিষ্কারের দায়িত্ব নিজেদের হাতে তুলে নিয়েছে একটি স্বেচ্ছাসেবক দল। দিল্লিতে প্রতিদিনই তারা নদীর ওপর পড়ে থাকা আবর্জনা ও আগাছা পরিষ্কার করছেন নিজ উদ্যোগে।

স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে একজন বলেন, ‘নদীর তলদেশ আবর্জনা ও কাপড়ে ভরা ছিল। এটি এতোটাই নোংরা ছিল যে, এখানে কেউ আসত না। দুর্গন্ধে নদীর তীরে বসা যেতো না।’

দূষণে জর্জরিত যমুনার পানির রং এখন কালো। নিত্যদিনের ময়লা আবর্জনায় স্রোতহীন নদীতে জমেছে সাদা ফেনা। একদিকে শহরের বর্জ্য অন্যদিকে কলকারখানার দূষণে ঘনত্ব বেড়েই চলছে ফেনার।

নদীর আসল রূপ ফিরিয়ে আনতে প্রতিদিনই একটু একটু করে চেষ্টা করে যাচ্ছে স্বেচ্ছাসেবকদের দল। তাদের প্রচেষ্টায় ধীরে ধীরে বাড়ছে নদী পাড়ে দর্শনার্থীদের সংখ্যাও।

একজন স্বেচ্ছাসেবক বলেন, ‘আমরা যদি পলিথিনের একটি ছোট টুকরো তোলা শুরু করি। তাহলে আজ না হোক আগামী পাঁচ বছরে অন্তত নদী চেহেরা বদলাবে। এটাই আমাদের আশা।’

এদিকে যমুনায় দূষণ বাড়ার কারণে দিল্লির খাবার পানি সরবরাহেও দেখা দিয়েছে সংকট। পরিবেশবিদদের মতে, শহরের ড্রেনেজ সিস্টেম উন্নত করার পাশাপাশি নদী দূষণ রোধে এগিয়ে আসতে হবে সরকারকে।

এসএইচ