টেপ ক্যাসেটের জগৎ: বাগদাদে এক ব্যবসায়ীর তিন লাখ গানের সংগ্রহ

এশিয়া
বিদেশে এখন
0

সংগ্রহের শখ থেকে ৫৫ বছর ধরে রুটি-রুজির মাধ্যমও টেপ ক্যাসেট ঘিরে। ইরাকের এমনই এক সৌখিন ব্যবসায়ীর সংগ্রহে আছে আরব সঙ্গীতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনপ্রিয় শিল্পীদের প্রায় তিন লাখ ক্যাসেট। অতীত রোমন্থনে প্রিয় গানের ক্যাসেট খুঁজতে আসেন অনেক গ্রাহকও।

স্মার্টফোন ও ইন্টারনেটের যুগে হাজার হাজার অডিও ক্যাসেট ও টেপ রেকর্ডারে দৃশ্যটি দেখে মনে হবে, এটি হয়তো অডিও ক্যাসেটের এক জাদুঘর। যা দেখা মাত্রই কেউ কেউ ফিরতে পারেন হারানো অতীতে। স্মৃতির পাতায় ভেসে উঠতে পারে আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিলুপ্ত হওয়া বিনোদন মাধ্যমটি।

শখ করে ১৯৭০ সাল থেকে টেপ ও অডিও ক্যাসেট সংগ্রহ করছেন ইরাকের রাজধানী বাগদাদের বাসিন্দা সাবাহ আল-সুদানি। রুটি-রুজির মাধ্যমটিও এই শখ ঘিরেই। দু'টি দোকানও আছে সৌখিন মানুষটির। সংগ্রহে আছে আরব সঙ্গীতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনপ্রিয় শিল্পীদের প্রায় তিন লাখ ক্যাসেটও।

আল-সুদানি বলেন, 'প্রত্যেকেরই ক্যাসেট প্লেয়ার নিয়ে স্মৃতি আছে। এমন অনেক ব্যক্তি আছেন যারা পুরোনো গানে তাদের প্রিয় মানুষদের কথা মনে করেন। তারা সেই গানগুলো ফিরে পেতে এখানে এসে ক্যাসেটের সন্ধান করেন।'

ডিজিটাল যুগেও কেন টেপ ক্যাসেটেই এখনও আটকে আছেন সুদানি? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, অনেক জনপ্রিয় গান ভিডিও স্ট্রিমিং ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউবে পাওয়া যায় না। এমনকি টেপ ক্যাসেট অনেক দীর্ঘস্থায়ী বলেও দাবি করেন তিনি। তবে আধুনিকতার ছোঁয়ায় জৌলুস হারিয়েছে টেপ ক্যাসেটের ব্যবসা।

আল-সুদানি বলেন, 'এমন কিছু ক্যাসেট বা গান আছে যা ইউটিউবে নেই। অর্থাৎ সেই গানগুলোর জন্য ক্যাসেটের বিকল্প তৈরি হয়নি। আপনি ক্যাসেট যতই বাজান না কেন, এর আয়ু বেশ দীর্ঘ। আমার কাছে ৭০-এর দশকের কিছু ক্যাসেট আছে এবং সেগুলো এখনও কাজ করে।'

অতীত রোমন্থনে সুদানির দোকানে প্রিয় গানের ক্যাসেট খুঁজতে আসেন অনেক গ্রাহক। তাদেরই একজন আহমেদ ইয়াসিন। যার কাছে এসব টেপ ক্যাসেট ঐতিহ্যের বাহক।

আল-সুদানি বলেন, 'এই ক্যাসেটগুলো আমার কাছে একপ্রকার ঐতিহ্য। আমি সঙ্গীত ভালোবাসি। তবে অবশ্যই সুস্থ্যধারার এবং পুরনো দিনের সঙ্গীত বেশি ভালো লাগে এবং উপভোগ্য।'

এদিকে বাগদাদের এক সিডি দোকানি মোহাম্মদ জানান, শুধু অডিও ক্যাসেট নয় ভিডিও প্লেয়ার ও সিডি প্লেয়ারও হারিয়েছে জনপ্রিয়তা। অডিও ক্যাসেট বা সিডির পরিবর্তে মোবাইলে ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে ইউটিউবে বেশি গান শোনেন। তবে সিডি ও ক্যাসেটের যুগে গান শোনার প্রতি মানুষের যে পরিমাণ উন্মাদনা ছিল, তা এখন আর নেই বলেও দাবি এই ব্যবসায়ীর।

এসএস