এশিয়া
বিদেশে এখন
0

প্রেসিডেন্টের বাসভবনের সামনে ইওল বিরোধীদের বিক্ষোভ

দক্ষিণ কোরিয়ার সদ্য অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইওলকে গ্রেপ্তারে ব্যর্থ হওয়ার পর এবার প্রেসিডেন্টের বাসভবনের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেছে ইওল বিরোধীদের একটি বড় অংশ। যদিও অভিশংসিত প্রেসিডেন্টের সমর্থকদের দাবি, মধ্যবর্তী নির্বাচন হলে আবারও জিতবেন ইওল। ইওল সমর্থকরা আরও বলছেন, ক্ষমতা গ্রহণের পর ইয়ুন সুক ইওলের পাশে দাঁড়াবেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

মাত্র একদিনের ব্যবধানে আবারও উত্তাল দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউল। গেল শুক্রবার দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইওলকে গ্রেপ্তারে ব্যর্থ হলে সন্ধ্যার পর থেকে বিক্ষোভে নামেন ইওল বিরোধীরা।

আজ (শনিবার, ৪ জানুয়ারি) সকালেও ঘরে ফেরেননি এই বিক্ষোভকারীরা। এদিন, মিছিল নিয়ে সেন্ট্রাল সিউলে প্রেসিডেন্টের বাসভবনের সামনে অগ্রসর হন তারা। যদিও পুলিশের বাঁধার মুখে থামতে হয় বিক্ষোভকারীদের।

অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে শুক্রবার সকালে প্রেসিডেন্টের বাসভবনের আশেপাশের এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে অন্তত ২ হাজার ৭শ' দাঙ্গা পুলিশ।

প্রেসিডেন্টের অভিশংসন নিয়ে ইওল বিরোধীদের মধ্যে কোনো সংশয় না থাকলেও, দক্ষিণ কোরীয় নাগরিকদের একাংশ মনে করে নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে গ্রেপ্তার করার প্রক্রিয়াটি সমীচীন ছিল না। এর মধ্য দিয়ে ইওলকে অপমান করা হচ্ছে। যদিও অধিকাংশের মত, ইওলকে গ্রেপ্তার না করা হলে পরিস্থিতি আরও অস্থিতিশীল হবে।

বিক্ষোভকারীদের একজন বলেন, ‘এখন উদযাপনের সময়। বছর শেষেও দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল- এটা মেনে নেয়া যায় না। দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক হয়ে বলছি, অবিলম্বে ইওলকে গ্রেপ্তার করা হোক। অন্যথায় দেশে শান্তি আসবে না।’

অন্যদিকে আরেক দক্ষিণ কোরীয়া নাগরিক বলেন, ‘সিওলকে গ্রেপ্তার করা হবে কি হবে না তা দেশের সাংবিধানিক আদালতের সিদ্ধান্ত। আদালত তার মতো করে বিষয়টি বিবেচনা করুক। কিন্তু একজন নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে শুধু অপদস্থ করার উদ্দেশ্যে গ্রেপ্তার করা উচিত না।’

এদিকে, দেশজুড়ে সমালোচনার মুখে ইয়ুন সুক ইওল শুরুতে কোণঠাসা হয়ে পড়লেও ধীরে ধীরে সরব হচ্ছেন ইওলের সমর্থক গোষ্ঠী। শুক্রবার অভিশংসিত প্রেসিডেন্টকে আটকের সময় তার বাসভবনের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন তার সমর্থকরা। তারা আশা করেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইয়ুন সুক ইওলকে পুনরায় নির্বাচিত হতে সাহায্য করবেন।

কোরীয় এক নাগরিক বলেন, ‘আশা করি, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইয়ুন সুক ইওলকে সমর্থন দেবেন। কারণ ইওলের অভিশংসন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ছিল না। এটি বাতিল হয়ে যাবে।’

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর দক্ষিণ কোরিয়ার চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে কথা বলবেন। তিনি নিজেও একটি নির্বাচনে কারচুপির কারণে হেরে গিয়েছিলেন।

গেল ৩ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্সিয়াল ক্ষমতাবলে কোনো আলোচনা ছাড়াই দেশজুড়ে সামরিক আইন জারি করেন ইওল। গেল মঙ্গলবার অভিশংসিত প্রেসিডেন্টকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন দক্ষিণ কোরিয়ার সুপ্রিম কোর্ট।

কয়েকঘণ্টা পর ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির সদস্যদের অনাস্থা ভোটে বাতিল হয় এই রায়। এরপর সিওলের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে বিদ্রোহ উসকে দেয়ার অভিযোগ আনেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা।

এই অভিযোগের ভিত্তিতে ৬ জানুয়ারির মধ্যে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্টকে আটকের নির্দেশ দেন আদালত। ৩ বার আদালতের সমন উপেক্ষা করায় শুক্রবার ইওলকে গ্রেপ্তার করতে তার বাসভবনে জড়ো হন প্রসিকিউটারসহ অ্যান্টি কোরাপশন ইনভেস্টিগেটিভ ইউনিটের কর্মকর্তারা। যদিও ৬ ঘণ্টা বাকবিতণ্ডার পরেও প্রেসিডেন্টকে গ্রেপ্তার করতে পারেননি তারা।

এএম