গাজার সমর্থনে সীমান্তের ওপার থেকে হামলা বন্ধে হিজবুল্লাহকে ভেঙে দিতে বদ্ধপরিকর ইসরাইল। আর এতেই তৃতীয়বার যুদ্ধের মুখে হিজবুল্লাহ-ইসরাইল। কিন্তু লক্ষ্য অর্জনের পথ দীর্ঘ।
সপ্তাহভর একের পর এক অভিযানে হিজবুল্লাহ'র যোগাযোগ ব্যবস্থা ধসিয়ে দিয়ে আর শীর্ষ কমান্ডারদের হত্যা করে ইসরাইল ভেবেছিল, শক্তিহীন হয়ে যাবে লেবাননের সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠীটি; সরে যাবে ইসরাইল-লেবানন সীমান্ত থেকে। কিন্তু প্রাথমিক পর্যায়ে ঘটেছে ঠিক উল্টোটা। ইসরাইলের জোরদার অভিযান সত্ত্বেও পিছু হঠার বদলে মাথা নত না করার প্রতিজ্ঞা হিজবুল্লাহ'র।
লেবানিজ ইউনিভার্সিটির ইতিহাস ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক জামাল ওয়াকিম বলেন, 'যেকোনো যুদ্ধে যে পক্ষ রুখে দাঁড়ানোর পথ বেছে নেয়, তাদের বহু ত্যাগ ও ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। আমার হিসেবে লেবাননের প্রতিরোধকামীরা নিজস্ব গতিতে সংঘাত চালিয়ে যাওয়ার পথ তৈরি করে নিচ্ছে।'
গাজায় অস্ত্রবিরতি কার্যকরের আগ পর্যন্ত ইসরাইলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে লেবানন থেকে হামলা অব্যাহত রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হিজবুল্লাহ। প্রতিদিনই কয়েকশ' করে রকেট ছুঁড়ে যাচ্ছে গোষ্ঠীটি। এমনকি সাহস থাকলে লেবাননে ঢোকার চ্যালেঞ্জও ইসরাইলকে দিয়ে রেখেছেন হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ।
এখন পর্যন্ত সে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেনি ইসরাইল আপাতত স্থল অভিযান নয়, বিমান হামলার লক্ষ্য বলে জানিয়েছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। অন্য সব ধরনের সামরিক চাপে শেষ পর্যন্ত কাজ না হলে যে কয়টি পথ খালি থাকবে ইসরাইল সরকারের হাতে, তার একটি নিঃসন্দেহে স্থল সেনা অভিযান।
অধ্যাপক ও সাংবাদিক সাইদ আরিকাত বলেন, গাজায় সত্যিকার অর্থেই ইসরাইল ব্যর্থ হয়েছে। হামাস নির্মূল, বন্দিদের মুক্তি এবং গাজার শাসকদল পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছিলেন নেতানিয়াহু । তিন লক্ষ্যেই ব্যর্থ হয়ে ইসরাইল সীমান্ত নিরাপদ করার নামে যুদ্ধে আরেকটা দিক যোগ করেছেন তিনি।
আগে থেকেই অবরুদ্ধ পশ্চিম তীর আর গাজা উপত্যকায় চলছে ইসরাইলের সেনা অভিযান। এই দুই অভিযানের লক্ষ্য অর্জনের আগেই মধ্যপ্রাচ্যে তৃতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সামরিক বিশেষজ্ঞরা। কারণ ১১ মাসের যুদ্ধে এখনও গাজাতেই শাসকদল হামাসকে হারাতে পারেনি ইসরাইল। সেখানে হিজবুল্লাহ'র দুর্গ যেমন হামাসের তুলনায় সুরক্ষিত, তেমনি যোদ্ধারাও দক্ষতায় এগিয়ে বলে মনে করা হয়।
বিশ্লেষকদের ধারণা, লেবাননে ঢুকতে হলে হাজার হাজার সংরক্ষিত সেনাসদস্যদের কাজে লাগাতে হবে ইসরাইলের, যাদের অনেকে ইতোমধ্যে গাজায় দায়িত্ব পালন করছেন।