ইসলামাবাদ সংলগ্ন ডি-চক ইন্টারসেকশনে দু'দিন ধরে অবস্থান ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। রাজধানীতে সমাবেশ করতে চাওয়ায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আটক হওয়ার পর শুক্রবার রাতেই ইসলামাবাদের উপকণ্ঠে রাওয়ালপিন্ডির গ্যারিসন সিটিতে হাজারও মানুষ অবস্থান নিতে থাকেন ।
পাকিস্তানের প্রধান ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল জামাত-ই-ইসলামীর ডাকে রাতভর রাস্তায় অবস্থানের পর আজও (শনিবার, ২৭ জুলাই) বিক্ষোভ -ধর্মঘট চলছে।
আকাশছোঁয়া মূল্যস্ফীতিতে লাগাম টানা এবং বিদ্যুৎ বিলের ওপর থেকে উচ্চ কর প্রত্যাহারের দাবিতে চলছে এ আন্দোলন। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে নতুন কর আইন আর বিদ্যুৎ বিল বৃদ্ধির জেরে জীবন দু:সহ হয়ে উঠেছে সাধারণ পাকিস্তানিদের।
আন্দোলনকারীদের একজন বলেন, 'মূল্যস্ফীতি বেশি, বিদ্যুৎ বিল বেশি। ব্যবসা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। অর্থনীতি নড়বড়ে। এসব কিছু হচ্ছে আমাদের শাসকদের কারণে। দাবি পূরণের আগ পর্যন্ত অবস্থান ধর্মঘট চালিয়ে যাবো। এর আগে উঠছি না।'
পাকিস্তানে বেকারত্ব অনেক বেশি জানিয়ে আরও একজন বলেন, 'তরুণ প্রজন্মের দুশ্চিন্তার শেষ নেই। আমি বিবাহিত, আমার ছয় সন্তান। যাই আয় করি, সব চলে যায় বিদ্যুৎ বিলে। বাচ্চাদের খাওয়াবো কীভাবে? অন্যায্য কর প্রত্যাহারের দাবি আদায়ে এখানে বসে আছি।'
বিদ্যুৎ পরিষেবায় করের বোঝা দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে সাধারণ পাকিস্তানিদের ওপর। ক্ষোভ দানা বাঁধছে সারাদেশে। এ অবস্থায় পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় রাজধানীর উচ্চ সুরক্ষিত এলাকায় আন্দোলনকারীদের প্রবেশ ঠেকাতে কথিত 'রেড জোন' ঘিরে জাহাজের কনটেইনার বসিয়ে ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে স্থানীয় প্রশাসন।
পাকিস্তানের জাতীয় পার্লামেন্ট, সরকারের শীর্ষ মন্ত্রণালয় ও কূটনৈতিক মিশনের অবস্থান এই এলাকায়। এদিকে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে পাকিস্তান সরকার।
জামাত-ই-ইসলামির নেতা হাফিজ নাঈম উর রেহমান বলেন, 'সাধারণের ওপর থেকে কর তুলে নিন, জমি-বাড়ির মালিকদের ওপর কর বসান। বিদ্যুৎ বিল থেকে কর সরান। বিদ্যুতে ৩৬ ধরনের কর বসিয়ে আমাদের ওপর বিল ছুঁড়ে দিয়ে তামাশা হচ্ছে? একে তো বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছেন, তারপর আবার করও বসাচ্ছেন। এভাবে চলতে পারে না।'
ইসলামাবাদ বলছে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল- আইএমএফের শর্ত পূরণে বাড়ানো হয়েছে বিদ্যুৎ বিল। এর মাধ্যমেই চলতি মাসে ৭০০ কোটি ডলারের নতুন চুক্তির বিষয়ে সমঝোতা সম্ভব হয়েছে দুই পক্ষের মধ্যে। এদিকে ভঙ্গুর অর্থনীতি আর রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানসহ বন্দি সব নেতার মুক্তির দাবিতে দেশজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ-পিটিআই।