টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় এলে ভারতকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে পরিণত করতে চান বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি। এখন ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের আগে সংসদে দেয়া সেই কথা রক্ষার পালা। কারণ ভোট লড়াইয়ে ইতোমধ্যেই জয় পেয়েছেন এই নেতা। তাই দেশকে আরও এগিয়ে নিতে নতুন সরকার গঠনের ৬ দিনের মধ্যেই সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার কথা ভাবছেন তিনি।
মোদি কি আসলেই তার কথা রাখবেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তার অতীত ঘাটলে দেখা যায়, ২০১৪ সালে প্রথমবার ক্ষমতায় এসে ভারতকে বিশ্ব অর্থনীতির দশম স্থানে তুলে নিয়ে আসে মোদি সরকার। এরপর ২০১৯ সালে ক্ষমতায় এসে পাঁচ বছরে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে ভারতকে প্রতিষ্ঠা করায় ভূমিকা রাখেন নরেন্দ্র মোদি। অবকাঠামো থেকে প্রযুক্তি খাত সর্বত্র লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া। তবুও কিছু কিছু কারণে অনেকেই মোদিকে অপছন্দ করলেও উন্নয়নে কারণে সরাসরি উপকারভোগীরা মোদি বন্দনা জানাতে ভোলেন না। তাই নরেন্দ্র মোদির প্রতিশ্রুতিতে ভরসারও কমতি নেই।
মোদির এক সমর্থক বলেন, 'একজন ভারতীয় হিসেবে আমরা প্রত্যেকেই গর্ববোধ করি। কারণ বিশ্বে ভারতের সুনাম দিন দিন বাড়ছে। আমাদের দেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য একজন শক্তিশালী নেতা রয়েছেন। যিনি বিশ্ব উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় দেশকে আরও এগিয়ে নিতে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন।'
অপর আরেক সমর্থক বলেন, 'তিনি দেশের অবকাঠামো, প্রযুক্তি এবং সামরিক খাতের উন্নয়ন ছাড়াও বিভিন্ন খাতে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন করেছেন। আমরা এসব উন্নয়নের সাক্ষী। তৃতীয় মেয়াদের শাসনকালে উন্নয়নের এক নতুন অধ্যায় রচনা করবেন তিনি।'
এদিকে মোদির তৃতীয় মেয়াদের ক্ষমতা বিশ্বের জন্য কতটা অর্থবহ হবে তা নিয়েও আলোচনার শেষ নেই। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, চীনকে রুখতে ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা আরও বাড়াতে পারে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় মিত্ররা। নরেন্দ্র মোদির সম্মানে ২০২৩ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের রাষ্ট্রীয় নৈশভোজের আয়োজন সেদিকেই ইঙ্গিত করে। এমনকি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে নয়াদিল্লির কাছে ৪ বিলিয়ন ডলারের অত্যাধুনিক ড্রোন বিক্রিরও অনুমোদন দেয় ওয়াশিংটন।
২০২০ সালে সীমান্তবর্তী এলাকা লাদাখে ভয়াবহ সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে ভারত-চীনের সেনারা। এরপর থেকে দুই দেশেরই কয়েক হাজার সেনা, তিন হাজার কিলোমিটার সীমান্তে সার্বক্ষণিক একে অপরের ওপর কড়া নজর রাখছে। এক দেশের অঞ্চল বা ভূখণ্ডকে নিজেদের বলে দাবি, তাদের মধ্যকার শতবর্ষব্যাপী উত্তেজনাকে উসকে দেয়। এই সুযোগে ভারতকে আরও কাছে টানার চেষ্টা চালাচ্ছে পশ্চিমারা। তাতে মোদি সরকার কতটা সায় দেয় সেটাই দেখার বিষয়।