যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গাজা যুদ্ধবিরতি কার্যকরের প্রায় দুই মাস পেরিয়েছে। প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি শর্ত ভঙ্গ নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ অব্যাহত রেখেছে হামাস ও ইসরাইল।
এরই মধ্যে দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি কার্যকরের লক্ষে তোড়জোড় শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও আরব বিশ্বের নেতারা। কিন্তু ঠিক যাদের জন্য যুদ্ধবিরতি, সেই গাজাবাসীর জীবনে আসেনি খুব একটা পরিবর্তন।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্যা গার্ডিয়ান জানায়, টানা দুই বছরের ইসরাইলি আগ্রাসনে গাজায় ভিটেমাটি হারানো মানুষের সংখ্যা প্রায় ২১ লাখ। যুদ্ধবিরতির পর এই মানুষেরা ইসরাইলি গোলাবারুদ থেকে কিছুটা মুক্তি পেলেও; প্রকৃতির করাল গ্রাস থেকে স্বস্তি মেলেনি। কয়েক দফা বৃষ্টি ও শীতের আগমন গাজাজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাস্তুচ্যুত মানুষের দুঃখ ও দুর্দশা বাড়িয়েছে কয়েকগুণ। এছাড়া, যুদ্ধের কারণে ভেঙে পড়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত উপত্যকাটির স্যানিটাইজেশন ব্যবস্থা। ফলে দূষণকে সঙ্গী করেই তাঁবুতে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি।
আরও পড়ুন:
এত প্রতিকূলতার মধ্যেও নিজেদের থাকার দাবিগুলোকে মজবুত করতে গাজার ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনগুলো থেকে রড সংগ্রহ করছে বাস্তুচ্যুত। হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে পিটিয়ে ভেঙে পড়া দেয়াল থেকে সংগ্রহ করছেন রড।
এরপর সেগুলোকে ভ্যানে করে নিয়ে যাচ্ছেন নিজেদের থাকার জায়গাগুলোতে। অনেকে জীবিকা নির্বাহের উৎস হিসেবে নিয়োজিত আছেন এ কাজে।
বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘আমরা ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়িগুলোর সামনে দিয়ে যাই। এরপর এগুলোর মালিকদের সঙ্গে কথা বলি। তারা শর্ত দেয়। আমরা ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কারের বিনিময়ে টাকা অথবা রডের মধ্যে একটি বেছে নেই।’
আরেকজন বলেন, ‘ঘরে অসুস্থ বাবা-মা আছে। এছাড়া,আমরা পাঁচ ভাইবোন। সবার ভরণপোষণ মেটাতে হালাল এই কাজের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করি।’
অনেকে আবার ঘর মেরামতে কাঠের বিকল্প হিসেবে ধ্বংসস্তূপ থেকে রড সংগ্রহ করেন।
ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘আমার কাঠ কেনার সামর্থ্য নেই। তাই ভাঙ্গা ভবনগুলো থেকে রড সংগ্রহ করছি। আমাদের অবস্থা সত্যিই ভয়াবহ। এই রডগুলো ছাড়া বাড়ি তৈরির কোনো উপায় নেই।’
গাজায় ১০ মিটার ধাতব রড কিনতে প্রয়োজন হয় ১৫ ডলার। যা কেনার সামর্থ্য নেই উপতক্যাটির অনেক বাস্তুচ্যুত বাসিন্দার।





