দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকা আগুনের এই দৃশ্য বাংলাদেশের সীমানাঘেঁষা মিয়ানমারের পশ্চিম রাখাইন রাজ্যের। বুধবার রাত ৯টার দিকে অঞ্চলটির ম্রাউক-ইউ জেনারেল হাসপাতালে জান্তা বাহিনীর ভয়াবহ বিমান হামলায় এমন বিধ্বংসী রূপ নেয় আগুন। এরইমধ্যে এ ঘটনায় বহু হতাহত হয়েছে। পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক।
গত সপ্তাহে দেশটির সাগাইং অঞ্চলে একটি চায়ের দোকানে হামলায় কমপক্ষে ১৮ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ২০ জন আহত হওয়ার পর জান্তা বাহিনীর সবচেয়ে বড় আক্রমণ এটি। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে এই হামলার মধ্য দিয়ে দেশটিতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে বলেও মন্তব্য করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন:
হাসপাতালে হামলার বিষয়ে এখনও কিছু জানায়নি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। জান্তার কোনো মুখপাত্রের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারেনি আন্তর্জাতিক কোনো গণমাধ্যম। তবে এই গৃহযুদ্ধ থেকে পরিত্রাণের উপায় হিসেবে আগামী ২৮ ডিসেম্বর থেকে নির্বাচন শুরুর ঘোষণা দিয়েছে সামরিক সরকার। কিন্তু নিজেদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে দেবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে বিদ্রোহী আরাকান আর্মিরা।
এমন পরিস্থিতিতে আরাকান আর্মি নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোয় পুনর্দখলে বর্তমানে জান্তা বাহিনী লড়াই চালাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। রাখাইন রাজ্যের প্রায় পুরোটাই নিয়ন্ত্রণ করে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। অং সান সু চির বেসামরিক সরকারকে উৎখাত করে সেনা অভ্যুত্থানের অনেক আগে থেকেই রাজ্যটিতে সক্রিয় ছিল গোষ্ঠীটি।
সংঘাত পর্যবেক্ষকদের মতে, ২০২১ সালের অভ্যুত্থানে এক দশকের গণতান্ত্রিক সরকারের কাছে থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নেয় মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী। দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরুর পর থেকে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে প্রতিহত করতে বছর বছর বিমান হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে জান্তারা। রাখাইনের ১৭টি প্রশাসনিক অঞ্চলের মধ্যে ১৪টির নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে আরাকান আর্মি।
