ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে এবার ২৮ দফা শান্তি প্রস্তাব উত্থাপন করে বিশ্বজুড়ে আলোচনায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরইমধ্যে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ইউরোপের। শান্তির জন্য ট্রাম্প ইউক্রেনকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করার কৌশলে এগুচ্ছে বলেও মনে করছে কিয়েভের মিত্ররা। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলছেন- ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন মুহূর্তে রয়েছে ইউক্রেন।
ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘আমরা ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন মুহূর্তগুলোর একটিতে রয়েছি। ইউক্রেন এখন সবচেয়ে কঠিন চাপের মুখোমুখি। এতে হয় মর্যাদা হারাতে হবে; না হয় একজন গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হারানোর ঝুঁকি রয়েছে। তবে আমি নিশ্চিতভাবে জানি, ইতিহাসে সবচেয়ে কঠিন মুহূর্তে আমি একা নই।’
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাবের খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ চলছে। যেখানে বেশ কিছু অসঙ্গতি উঠে এসেছে। বেশ কয়েকটি প্রস্তাবে, ইউক্রেনকে রাশিয়ার কাছে অনেক বেশি ছাড় দিতে হবে। এছাড়া কয়েকটি শর্তে রয়েছে অস্পষ্টতাও।
আরও পড়ুন:
একটি প্রস্তাব অনুযায়ী, ইউরোপীয় যুদ্ধবিমানগুলো পোল্যান্ডে অবতরণের শর্ত নিয়ে দেখা দিয়েছে ধোঁয়াশা। কারণ এর স্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা নেই প্রস্তাবে। আরেকটি প্রস্তাবে নিরাপত্তা গ্যারান্টির জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অর্থ দেয়ার প্রস্তাব থাকলেও উল্লেখ নেই পরিমাণ।
এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত ইউক্রেন পুনর্গঠনের জন্য জব্দ করা রুশ সম্পদ থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলার এবং আরও ১০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে ইউরোপ। তবে অবাক করা বিষয় হলো, পুনর্গঠন থেকে আসা লাভের ৫০ শতাংশ যোগ হবে মার্কিন কোষাগারে। এমন শর্ত জুড়ে দিলেও, লাভ কীভাবে আসবে তা নিয়ে কোনো ব্যাখ্যা নেই।
সবচেয়ে বেশি সমালোচনায় পড়েছে এমন একটি শর্ত যেখানে বলা হয়েছে, যুদ্ধের সময় যাবতীয় কর্মকাণ্ডের জন্য পূর্ণ ক্ষমা করবে উভয় পক্ষ। কিন্তু রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ঘোষিত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এখনও জারি রয়েছে। আর আন্তর্জাতিক সংস্থার দ্বারা যুদ্ধাপরাধের অভিযুক্ত কাউকে চাইলেই ক্ষমা করতে পারে না যুক্তরাষ্ট্র।
লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক থিঙ্ক ট্যাংক চ্যাথাম হাউজের বিশ্লেষক কিয়ার জায়লেসের মতে, ট্রাম্পের প্রস্তাবে আনন্দিত হওয়ার মতো বিষয় নেই। ইউরোপীয় পক্ষগুলো প্রস্তাবে পরিবর্তন আনতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসবে বলে মনে করেন তিনি।





