২০২১ এর ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের পর আগামী মাসে প্রথম নির্বাচন আয়োজন করতে যাচ্ছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। এরইমধ্যে একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। বিপরীতে বিরোধীদলগুলোকে সবদিক দিয়ে চাপে রেখে এই নির্বাচনকে সার্থক করে তোলার জন্য একের পর এক বিদেশ সফরে যাচ্ছেন মিয়ানমারের জান্তা প্রধান। আদায় করার চেষ্টা করছেন আন্তর্জাতিক সমর্থন।
অনেক মহলেই প্রশ্নবিদ্ধ এই নির্বাচন আয়োজনের আগে এবার মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনেছে দক্ষিণ এশীয় মানবাধিকার সংগঠন ফরটিফাই রাইটস।
অলাভজনক এই সংস্থার ২৪ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে দাবি করা হচ্ছে, নির্বাচনের মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে পূর্বাঞ্চলীয় কায়িন রাজ্য ও এর সীমান্তে অবস্থিত স্কুল, গির্জা, স্বাস্থ্যকেন্দ্র এমনকি শরণার্থী শিবির লক্ষ্য করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আক্রমণ চালাচ্ছে জান্তা সেনারা। চলতি বছরের জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জান্তা সেনাদের অন্তত ১২টি আলাদা হামলায় প্রাণ গেছে অর্ধশত নাগরিকের।
আরও পড়ুন:
ফরটিফাই রাইটসের প্রতিবেদনে আরও বলা হচ্ছে, বিদ্রোহীদের দমনের নামে জান্তা সরকারের এই আচরণের যৌক্তিকতা আন্তর্জাতিক মহলের সামনে পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন। একাধিক মানবাধিকার সংস্থার দাবি, এই অবস্থায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ এবং জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর উচিত মিয়ানমারের জান্তা সরকারকে চাপে রাখতে দেশটিতে অস্ত্র ও জ্বালানি রপ্তানি বন্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা।
এছাড়া আসন্ন নির্বাচনকে কোনোভাবেই স্বীকৃতি না দেয়ার প্রস্তাব তাদের। ফরটিফাই রাইটসের প্রতিবেদনে স্পষ্টভাষায় অভিযোগ করা হচ্ছে, যেখানে রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর চলমান নিপীড়ন, আটক ও দেশজুড়ে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড চলছে, সেখানে ডিসেম্বরের নির্বাচন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্যতা পেতে পারে না।
এর আগে দেশটি সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০২০ এর নভেম্বরে। ২০২১ এর ফেব্রুয়ারিতে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের পর সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং ক্ষমতা গ্রহণ করে মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা জারি করেন। এরপর দেশটিতে শুরু হওয়া গণবিক্ষোভ রূপ নেয় সশস্ত্র সংঘাতে। আসন্ন ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজন করে দেশে গণতন্ত্র ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেনাপ্রধান।





