গেলো আগস্টে আলাস্কায় ট্রাম্প-পুতিনের বৈঠকের পরও আলোর মুখ দেখেনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। বরং এর পর থেকে বাড়ছে উত্তেজনা। এমনকি রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমাদের কূটনৈতিক সংঘাতও ঊর্ধ্বমুখী।
এরই মধ্যে পোল্যান্ডে থাকা রুশ দূতাবাস বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সম্প্রতি ইউক্রেন-পোল্যান্ড সীমান্ত এলাকায় রেললাইন বিস্ফোরণের ঘটনায় অভিযোগের তীর ছুড়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নিলো পোল্যান্ড।
পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাদোস্লাভ সিকোরস্কি বলেন, ‘আমি এরই মধ্যে পোল্যান্ডের গডানস্কে থাকা রাশিয়ার শেষ কনস্যুলেট বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এমনকি পোল্যান্ডে রাশিয়ান কূটনীতিকদের চলাচলের উপরও বিধিনিষেধ আরোপ করবো। এছাড়াও আরও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
শুধু তাই নয়, রুশ হুমকি থেকে দেশের সব অবকাঠামোর নিরাপত্তায় ১০ হাজার সৈন্য মোতায়েনেরও ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপের দেশটি। এমনকি পোল্যান্ড সীমান্তে চালানো হামলাকে পুরো ইউরোপের জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি প্রধান কাজা ক্যালাস বলেন, ‘সোমবার পোলিশ রেলওয়ে ট্র্যাকে চালানো আক্রমণটি ইউরোপীয় পরিবহন অবকাঠামোর জন্য অভূতপূর্ব হুমকি। রুশ আক্রমণ ক্রমশই নির্লজ্জ ও বেপরোয়া হয়ে উঠছে।’
পোল্যান্ডের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মার্সিন কিয়েরভিনস্কি বলেন, ‘পুলিশ সেনারা রেলওয়ে পরিষেবা ছাড়াও সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সুরক্ষায় সহযোগিতা করবে। নিরাপত্তার জন্য সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করবে। নিরাপত্তা নিশ্চিতে ভবিষ্যতে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:
এ অবস্থায় পোল্যান্ডের রেললাইন বিস্ফোরণের ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করার পাশাপাশি দূতাবাস বন্ধের সিদ্ধান্ততে তীব্র সমালোচনা করেছে ক্রেমলিন।
রাশিয়ার ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘পোল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবনতি হয়েছে। পোলিশ কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক শূন্যে নামিয়ে আনছে, এটা দুঃখজনক। আমি বলবো, তাদের সাধারণজ্ঞানের অভাব রয়েছে।’
এদিকে যুক্তরাজ্য-রাশিয়া উত্তেজনাও এখন তুঙ্গে। সবশেষ যুক্তরাজ্যের জলসীমার কাছে প্রথমবারের মতো একটি রুশ গুপ্তচর জাহাজ রয়্যাল এয়ার ফোর্স পাইলটদের লক্ষ্য করে লেজার লাইট ধরায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। জাহাজটি হুমকি হয়ে উঠলে সামরিক পদক্ষেপ নিতে যুক্তরাজ্য প্রস্তুত বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জন হিলি।
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জন হিলি বলেন, ‘ইয়ান্টার নামের রুশ গুপ্তচর জাহাজ আমাদের পাইলটদের দিকে লেজার ধরেছে। রাশিয়ার এ পদক্ষেপ অত্যন্ত বিপজ্জনক। এ বছর দ্বিতীয়বারের মতো এ জাহাজ যুক্তরাজ্যের জলসীমার কাছে মোতায়েন করা হয়েছে। তাই রাশিয়া এবং পুতিনকে বলতে চাই, আমরা সব দেখতে পাচ্ছি, আমরা জানি তারা কী করছে। যদি ইয়ান্টার এ সপ্তাহে দক্ষিণে অগ্রসর হয়, তাহলে মোকাবিলার জন্য আমরা প্রস্তুত।’
এদিকে ইউক্রেনে যুদ্ধকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার সঙ্গে ক্রমেই বৈরিতা বাড়ায় নিজেদের সব দিক দেয়ে প্রস্তুত রাখছে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো। এ আওতায় রাশিয়া ড্রোন উৎপাদন বাড়ানোয় হুমকি মোকাবিলার অংশ হিসেবে ন্যাটো সস্তা উপায় খুঁজছে।
এর জন্য পরীক্ষামূলকভাবে পোল্যান্ডে ড্রোন-প্রতিরোধী দক্ষতা অনুশীলন শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং রোমানিয়ার সৈন্যরা।





