অচলাবস্থা ভেঙে ফের চালু হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কার্যক্রম। দুই প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের মধ্যকার দ্বন্দ্বের জেরে ভেস্তে যায় দেশটির সরকারি ব্যয় সংক্রান্ত বাজেট বিল পাস। ফলাফল ৪০ দিনের বেশি রেকর্ড শাটডাউন। বেতন ছাড়াই এতদিন কাজ করেন দেশটির জরুরি সেবায় নিয়োজিত লাখ লাখ ফেডারেল কর্মী। এছাড়া, কর্মী সংকটে হুমকির মুখে পড়ে দেশটির অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল ও চার কোটিরও বেশি মানুষের জন্য বরাদ্দকৃত খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি- স্ন্যাপ।
তবে অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চকক্ষ সিনেটে একটি সমঝোতা বিল পাস হয়েছে। সোমবার, ডেমোক্র্যাট দলের আট সদস্য নিজেদের দলের বিরোধিতা করে রিপাবলিকানদের অনুমোদন করা বাজেট বিলে সম্মতি দেয়। আর এতে ৬০-৪০ ভোটে পাস হয় বাজেট ব্যয় সংক্রান্ত বিলটি। এই বিলটি আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত ট্রাম্প প্রশাসনকে ফেডারেল কার্যক্রম চালিয়ে যেতে সাহায্য করবে। অবশেষে সমঝোতা আসায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন আইনপ্রণেতারা।
আরও পড়ুন:
রিপাবলিকান সিনেটর সুসান কলিন্স বলেন, ‘আমরা সরকার পুনরায় চালু করতে যাচ্ছি। যেসকল ফেডারেল কর্মী বেতন ছাড়াই কাজ করেছে বা বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে, তাদের বেতন নিশ্চিত করা হবে। আমি হাউস প্রতিপক্ষদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। এটি মার্কিনীদের জন্য একটি দুর্দান্ত বিজয়।’
যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট মেজোরিটি লিডার জন থুন বলেন, ‘ছয়টি যন্ত্রণাদায়ক সপ্তাহের শেষে অবশেষে সিনেটকে চালু করতে যারা ভূমিকা রেখেছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। এখন আমাদের লাখ লাখ ফেডারেল কর্মীর বেতন পরিশোধ করতে হবে।’
এদিকে, শাটডাউনের বিষয়ে হোয়াইট হাউসে কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে তিনি ডেমোক্র্যাটদের দেড় ট্রিলিয়ন ডলারের স্বাস্থ্য বিলে স্বাক্ষর না করার বিষয়ে নিজের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমার জেল থেকে আসা লোকদের ও মাদকসেবীদের জন্য স্বাস্থ্য বিলের নামে অর্থ অপচয় করব না। বরং আমরা এমন একটি বিল পাস করতে চাই যেখানে সরকারি অর্থ বীমা প্রতিষ্ঠান নয় সরাসরি জনগণের হাতে পৌঁছাবে।’
এদিকে আলাদা ট্রুথ সোশ্যাল বার্তায়, বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণকারীদের যাত্রীদের কথা বিবেচনা করে দ্রুত কাজে ফেরার নির্দেশ দেন তিনি। জানান, এক মাসেরও বেশি সময় ধরে যারা অর্থ ছাড়া কাজ করেছে তাদেরকে ১০ হাজার ডলার বোনাস দেবে রিপাবলিকান সরকার। তবে কাজে না ফেরাদের ছাঁটাইয়ের হুমকিও দেন তিনি।
এখন বিলটি কার্যকরে প্রতিনিধি পরিষদের অনুমোদনের প্রয়োজন। এরপর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বাক্ষর হলেই কার্যকর হবে নতুন বিল। এরই মধ্যে ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন বিলটি স্বাক্ষরের।
গত অক্টোবরে স্বাস্থ্য সেবা বিলকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে আটকে যায় নতুন অর্থবছরের প্রশাসনিক বিল। বিলটি পাসে অন্তত ৬০টি ভোটের প্রয়োজন ছিল ক্ষমতাসীন রিপাবলিকানদের। কিন্তু ৫৩-৪৭ ভোটের জালে এতদিন আটকে ছিল বিলটি।





