ভোটে জেতার পর এভাবেই নিউ ইয়র্কের শ্রমজীবী মানুষের পক্ষে কথা বলেছিলেন শহরটির নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি। বিশ্ব রাজনীতির পোস্টার বয় বনে যাওয়া এ তরুণ তুর্কি গত এক বছরে ব্যতিক্রমী প্রচারণার মাধ্যমে নিউ ইয়র্ক সিটির ভোটারদের আস্থা অর্জন করেন দারুণভাবে। শহরের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে মানুষের সঙ্গে কথা বলে তাদের সমস্যাগুলো শুনে নির্বাচনি ইশতেহার সাজান মামদানি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সার্বজনীন চাইল্ড কেয়ার, ফ্রি পাবলিক বাস সার্ভিস, রেন্ট-স্ট্যাবিলাইজড হাউজিং এবং সিটি-মালিকানাধীন মুদি দোকানের মতো প্রতিশ্রুতিগুলো মামদানির নির্বাচনি সাফল্যের মাপকাঠি। পুরো নির্বাচনি সময়জুড়ে অভিবাসীদের পক্ষেও কথা বলেন মামদানি। এমনকি জয়ের পর দেয়া প্রথম ভাষণেও মামদানি নিউ ইয়র্ককে অভিবাসীদের শহর বলে অভিহিত করেন। নিজেকে ইঙ্গিত করে বলেন, এখন থেকে শহরটির নেতৃত্ব দেবেন একজন অভিবাসী। নির্বাচনের সময় মামদানিকে অবৈধ অভিবাসী বলে কটাক্ষ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ফল গণনার কয়েকদিন পেরিয়ে গেলেও এখনও আনন্দে ভাসছেন মামদানিকে ভোট দেয়া নিউ ইয়র্ক সিটির কয়েক লাখ ভোটার। তাদের প্রত্যাশা, আগের মেয়রদের মতো শুধু কথার ফুলঝুরিতে নয়, প্রতিশ্রুতি পূরণে কাজ করবেন মামদানি।
আরও পড়ুন:
নিউ ইয়র্ক সিটির এক বাসিন্দা বলেন, আমি মামদানির কাছে পরিবর্তন প্রত্যাশা করি। এর আগে যারা ডেমোক্রেটিক দলের মেয়র ছিল, তারা শহরবাসীর ভোটকে হালকাভাবে নিয়েছিল এবং ধনী শ্রেণির প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছিল। কিন্তু এখন সময় এসেছে শ্রমজীবী মানুষের যথাযথ স্বীকৃতি পাওয়ার। এছাড়া, মামদানি তার পুরো প্রচারণাজুড়ে সাশ্রয়ী আবাসনের পক্ষে কথা বলেছেন। যা অন্যান্য রাজনীতিবিদেরা উপেক্ষা করেছেন। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
অন্য এক বাসিন্দা বলেন, অনেকেই আছেন যাদের বাস ভাড়া দেয়ার সক্ষমতা নেই। তাদের জন্য বিনামূল্যে বাস সার্ভিস পাওয়া একটি দারুণ ব্যাপার। শুধু মুসলিম নয়, নিউ ইয়র্কের প্রতিটি ধর্মাবলম্বী মানুষের জন্য কাজ করবে মামদানি।
নিউ ইয়র্ক সিটির এক ব্যবসায়ী বলেন, মামদানি ছোট ব্যবসা এবং কর ও বিক্রয়ের দিকে নজর দিতে চেয়েছেন। আমরা লোকসানের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। আগে একটা স্যান্ডুইচ ৬ ডলারে বিক্রি করতাম। এখন ৮ ডলারে করি। তাও লাভ হয় না।
মামদানির ভোট ব্যাংকের একটা বড় অংশ ছিল তরুণ ভোটাররা। তারাও জানাচ্ছেন নতুন মেয়রের কাছে তাদের প্রত্যাশার কথা।
তরুণ ভোটাররা বলেন, আমি আশা রাখি মামদানি শহরের কিশোর-কিশোরীদের জন্য নিরাপদ স্থান তৈরি করতে পারবেন। কেননা অনেক তরুণ ব্যস্ত রাস্তায় সাবওয়ে সার্ফিংয়ের মতো অ্যাক্টিভিটিসে অংশ নিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছে।
সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরের ১ জানুয়ারি নিউ ইয়র্ক সিটির ১১তম মেয়র হিসেবে শপথ নেবেন ৩৪ বছর বয়সী জোহরান মামদানি।





