সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, জর্জ ডব্লিউ বুশ, জন এফ কেনেডি ও ফ্রাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্টের আগুনঝরা ভাষণ যেভাবে মন্ত্রমুগ্ধ করেছিল, তেমনি নিউ ইয়র্কের নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানির বক্তব্য ইতিহাস সৃষ্টি করে সাড়া ফেলেছে পুরো বিশ্বে।
মেয়র হিসেবে নির্বাচনের পর বিজয়ী ভাষণে ২৫ মিনিট ধরে কথা বলেন মামদানি। শুরুতে তাকে সমর্থনে দেয়ায় মুসলিমসহ ধর্ম-বর্ণ নির্বেশেষে সকলকে ধন্যবাদ জানান তিনি। বিশেষ ধন্যবাদ জানিয়েছেন তরুণ প্রজন্মকে।
নিউ ইয়র্ককে স্বপ্নের শহর হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় জানান শহরটির প্রথম মুসলিম মেয়র জোহরান মামদানি।
মামদানি বলেন, ‘সূর্য ডুবে গেলেও, নতুন ভোরের অপেক্ষায় নিউ ইয়র্কবাসী। ভবিষৎ গড়ার দায়িত্ব আমাদের হাতে। নিউ ইয়র্ক পরিবর্তনের ম্যান্ডেট আমাদের হাতে। নতুনভাবে রাজনীতি করার ম্যান্ডেট আমাদের হাতে। স্বপ্নের নতুন শহর গড়ে তুলবো।’
স্বপ্নের এই নিউ ইয়র্ক শহর হবে অভিবাসীদের। এমনটাই প্রত্যাশা তরুণ মেয়র মামদানির। নবনির্বাচিত এ মেয়র বলেন, ‘নিউ ইয়র্ক হবে অভিবাসীদের শহর। যেখানে অভিবাসীরাই থাকবে ক্ষমতার অধিকারী। আমি মুসলিম হিসেবে গর্ববোধ করি।’
মামদানির বক্তব্যে আশ্বাস ছিল নিউ ইয়র্কের ২০ লাখ বাসিন্দার জন্য বাসাভাড়া স্থগিত, বাসভাড়া মওকুফসহ নানা ধরণের নাগরিক সুবিধার বিষয়।
আরও পড়ুন:
জোহরান মামদানি বলেন, ‘২০ লাখের বেশি নিউইয়র্কবাসীর জন্য বাসাভাড়া স্থগিত করা হবে। বাস ভাড়া ফ্রি এবং শিশুদের যত্নে সার্বজনীন চাইল্ডকেয়ারের সুব্যাবস্থা করা হবে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেখানে অভিবাসী, ট্রান্সজেন্ডার ও কৃষ্ণাঙ্গদের সরকারি চাকরি থেকে অব্যাহতি দিচ্ছেন সেখানে তিনি নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছেন লাখো মানুষকে। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন নিউ ইয়র্কে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, বাসিন্দাদের নিরাপত্তা, মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে কাজ করার বিষয়ে। এ শহরের অপরাধ কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।
সবকিছু ঠিক থাকলে জানুয়ারির ১ তারিখে নিউ ইয়র্ক শহরের মেয়র হিসেবে শপথ নেবেন ৩৪ বছর বয়সী জোহরান মামদানি। নিউ ইয়র্কে নতুন রাজনীতিই যার এজেন্ডা।
তবে নিউ ইয়র্ককে স্বর্গ হিসেবে তৈরি করার যে স্বপ্ন মামদানি দেখছেন তা রাতারাতি বাস্তবায়ন সম্ভব নয় উল্লেখ করে এক বিশ্লেষক জানান, যেসব নাগরিক সুবিধার কথা তিনি বলছেন তা যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য শহরে বাস্তবায়ন করা গেলেও নিউ ইয়র্কে সম্ভব নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ এরিক গ্যান্ডার বলেন, ‘আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে নিউ ইয়র্কে সুলভ মূলের বাসা ভাড়ার ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। তাই রাতারাতি এ শহর স্বর্গ হয়ে যাবে বিষয়টি এমন নয়। এক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিষয় রয়েছে।’
তবে বিশ্বের অর্থনৈতিক হাব খ্যাত নিউ ইয়র্ক শহরে মামদানি বিনিয়োগ টানতে সফল হবেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।




