প্রথমে দখলে নেয়া হচ্ছে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত গাজার বহুতল ভবন। তারপর সেখান থেকে স্নাইপারের সাহায্যে আঘাত হানা হচ্ছে লক্ষ্যবস্তুতে। শনিবার নিজেদের অভিযানের এমনই একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বিভাগ।
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের আগ মুহূর্তে পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলো যখন একে একে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়ার দ্বারপ্রান্তে, জোর দাবি আসছে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের, তখন গাজা সিটি দখলে স্থল ও আকাশ পথে একযোগে অভিযান চালাচ্ছে ইসরাইল। শনিবার রাতের হামলায় গাজার এক চিকিৎসকের পুরো পরিবারসহ হত্যা করা হয়েছে। চলমান এ অভিযানের জেরে উপত্যকার মূল শহর ছেড়েছেন সাড়ে ৪ লাখ বাসিন্দা। কোথায় গেলে প্রাণে রক্ষা পাবেন এ ফিলিস্তিনিরা- সে প্রশ্নের উত্তর জানা নেই কারোরই
ফিলিস্তিনি বাসিন্দারা বলেন, ‘ফিলিস্তিনি জনগণের কথা ভাবুন একবার। যুদ্ধ বিরতির কেন চাই আমাদের?যাতে এখানকার মানুষ নিরাপদে থাকতে পারে। শিশুরা নিহত হচ্ছে, বৃদ্ধদের প্রাণ যাচ্ছে, তরুণরাও আর নেই। আমরা কোথায় যাব?’
এমন প্রেক্ষাপটে গাজায় আগ্রাসনের জেরে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার করা গণহত্যা মামলায় আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়েছে ব্রাজিল। আর এ গণহত্যা প্রসঙ্গে বিস্ফোরক এক মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ওভাল অফিসে সাংবাদিক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলছেন, গাজায় ইসরাইল গণহত্যা চালাচ্ছে কী না এ নিয়ে জাতিসংঘের প্যানেলের তৈরি প্রতিবেদন পর্যালোচনা করার সময় পাননি তিনি। তবে ২০২৩ এর ৭ অক্টোবর হামাস ইসরাইলে যে হামলা চালিয়েছিল তা গণহত্যার চূড়ান্ত উদাহরণ বলে মনে করেন ট্রাম্প।
আরও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমি রিপোর্ট দেখিনি এখনও। কিন্তু ৭ অক্টোবর যা ঘটেছিল তা কী গণহত্যা নয়? আপনি কী মনে করেন? এটা ছিল নৃশংস গণহত্যা। আপনি হত্যা বলবেন নাকি গণহত্যা বলবেন তা আপনার বিষয়।’
তবে, নেতানিয়াহু প্রশাসনের গতিবিধি থেকে এটি স্পষ্ট গাজায় যুদ্ধ বন্ধে কোনো ধরণের আগ্রহ নেই ইসরাইলের। এরমধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জীবিত ইসরাইলি জিম্মিদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করায়, ক্ষেপে উঠেছে ইসরাইলের সাধারণ মানুষ। শনিবার তেল আবিবের নিয়মিত বিক্ষোভে সরাসরি গাজা যুদ্ধ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন তারা।
বিক্ষোভকারীরা বলেন, ‘যুদ্ধ বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন। গাজাবাসীরও নিরাপদে বেঁচে থাকার অধিকার আছে। আমরা জিম্মিদের ফেরত চাই। তাদের হাতে বেশি সময় নেই। এজন্য ৩০ বা ৬০ দিনের প্রস্তাব করা হচ্ছে। এত সময় নেই তাদের কাছে।’
এমন পরিস্থিতিতে হামাস প্রকাশিত একটি ছবি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে। টাইমস অব ইসরাইলের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ছবিতে যে ৪৮ জনকে দেখা যাচ্ছে তারা প্রত্যেকেই হামাসের হাতে জিম্মি হয়েছিলেন। প্রত্যেক জিম্মির ছবির নিচে লেখা আছে ইসরাইলি পাইলট রন আরাদের নাম যিনি ১৯৮৮ সাল থেকে নিখোঁজ। এই ছবির মাধ্যমে হামাস কোনো বার্তা দিতে চায় নাকি প্রোপাগান্ডা হিসেবেই ছবিটি প্রচার হচ্ছে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে ইসরাইলি গণমাধ্যম।
এদিকে, ইসরাইলের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্নের দাবিতে রাজপথে নেমেছেন গ্রিসের ফিলিস্তিনপন্থী জনগণ। শনিবার দেশটির পার্লামেন্টের সামনে জড়ো হয়ে ফিলিস্তিনে ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদ করেছেন বিক্ষোভকারীরা।





