২০১৫ সালের বহুল আলোচিত পারমাণবিক চুক্তি মানছে না ইরান— এমন অভিযোগে গেলো আগস্টে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি ইরানের ওপর আন্তর্জাতিক পারমাণবিক নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের প্রক্রিয়া শুরু করে। এবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার প্রস্তাব দেয় ইরান।
শুক্রবার এই প্রস্তাবের পক্ষে বিপক্ষে ভোট দেয় নিরাপত্তা পরিষদে ১৫ সদস্য। ভোটাভুটিতে টেকেনি সেই প্রস্তাব। রাশিয়া, চীন, পাকিস্তান ও আলজেরিয়া ইরানের পক্ষে ভোট দিলেও বিরোধিতা করে ৯ দেশ, আর ভোট দেয়া বিরত ছিলো আরো দুই দেশ।
ভোটের পর ইরানের জাতিসংঘ দূত আমির সাঈদ ইরাভানি জানান পরিষদে ঐকমত্য না থাকলেও কূটনীতির দরজা এখনো খোলা। তবে কার সঙ্গে আলোচনায় বসবে সেই সিদ্ধান্ত ইরানই নেবে।
ইরানের জাতিসংঘ দূত সাঈদ ইরাভানি বলেন, ‘কূটনীতির দরজা বন্ধ নয়। তবে কার সঙ্গে কীসের ভিত্তিতে আলোচনা হবে সে সিদ্ধান্ত ইরানই নেবে। খুব শিগগিরই তেহরান প্রতিপক্ষদের সঙ্গে একটি বৈঠকে বসবে।’
নতুন আলোচনার জন্য প্রস্তুত থাকার কথা জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের জাতিসংঘ দূত বারবারা উডওয়ার্ড।
যুক্তরাজ্যের জাতিসংঘ দূত বারবারা উডওয়ার্ড বলেন, ‘মূল শর্ত পূরণ না হলে দ্রুত সমাধান সম্ভব নয়। তবে যুক্তরাজ্য পরের সপ্তাহে এবং তারপরেও মতভেদ দূর করার জন্য আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।’
আরও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রও শুক্রবার প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়। তবে দেশটির ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত জানান—এতে কূটনীতির সম্ভাবনা বন্ধ হয়নি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও ইরানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত জাতিসংঘ রাষ্ট্রদূত ডরোথি শিয়া বলেন, ‘২৭ সেপ্টেম্বরে স্ন্যাপব্যাক প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগে বা পরে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইরানের সঙ্গে অর্থবহ, সরাসরি ও নির্দিষ্ট সময়সীমার আলোচনায় বসতে প্রস্তুত রয়েছেন।’
আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে ইউরোপীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি।
ইউরোপীয় দেশগুলো প্রস্তাব করেছে, ইরান যদি জাতিসংঘ পরিদর্শকদের প্রবেশাধিকার দেয়, ইউরেনিয়ামের মজুত নিয়ে ধোঁয়াশা দূর করে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসে, তবে ছয় মাস পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা পেছানো যেতে পারে।
অন্যদিকে, ইরানের মিত্র রাশিয়া ও চীন ছয় মাসের জন্য ২০১৫ সালের চুক্তি বাড়ানোর খসড়া প্রস্তাব করেছে। তবে সেই প্রস্তাব এখনো নিরাপত্তা পরিষদে তোলা হয়নি।
কূটনৈতিক আলোচনার জন্য সময় থাকলেও ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সমঝোতা না হলে ইরানের ওপর সব আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আবারও ফিরবে।





