১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১২ মে; যুক্তরাষ্ট্র চীনের ১০০ দিনের পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপ থেকে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো বিশ্ববাসী।
সোমবার (১৩ মে) দুই দেশের প্রতিনিধিরা পরস্পরের পণ্যে ১১৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক কমাতে সম্মত হন। এতে চীনা পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি শুল্ক হার নেমে এসেছে ৩০ শতাংশে। অন্যদিকে মার্কিন পণ্যে বেইজিংয়ের শুল্ক মাত্র ১০ শতাংশ। ১৪ মে থেকে কার্যকর হতে যাওয়া এই সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে আগামী ৯০ দিন।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি, চীনকে আঘাতের কোনো আগ্রহ ছিল না তার। তবে শুল্কারোপের কারণে বেইজিংয়ের বিপর্যস্ত অর্থনীতিকে রক্ষায় অবদান রাখতে পারায় খুশি তিনি। নির্ধারিত সময় শেষে শুল্ক হার আগের অবস্থায় ফিরবে না বলেও আশাবাদী ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘তারা চীনের বাজারকে উন্মুক্ত করতে সম্মত হয়েছে। এটি দারুণ সংবাদ। আমাদের সবার জন্যেই এটি ভালো খবর। আশা করছি শান্তি ও একত্রীকরণের জন্য বিষয়টি সুফল বয়ে আনবে।’
ট্রাম্প জানান, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নিজেদের বাজারকে উন্মুক্ত করতে সম্মত হয়েছে চীন। পাশাপাশি চলতি সপ্তাহে শি জিনপিংয়ের সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনাও রয়েছে।
সম্পূরক শুল্ক ৯০ দিন স্থগিত করায় ট্রাম্প ও জিনপিং প্রশাসনকে স্বাগত জানিয়েছে দুই দেশের জনগণ। চীনের নাগরিকরা বলছেন, উচ্চ শুল্কহার উভয় দেশের অর্থনীতিকে খাদের কিনারায় ঠেলে দিচ্ছিলো। দুই মেরুর এত দ্রুত সম্মতিতে পৌঁছানো চমকে গেছেন অনেকে।
চীনের নাগরিকদের একজন বলেন, ‘সাধারণ মানুষ এই খবরে স্বস্তি ফিরে পেলো। আশা করছি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত উভয় দেশের অমীমাংসিত বিষয়গুলো সমাধান করবে।’
আরেকজন বলেন, ‘আমি সত্যি চমকে গেছি। ভেবেছিলাম দুই পক্ষের সম্মতি আসবে। কিন্তু এত দ্রুত হবে, তা ভাবিনি।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, চুক্তি সম্পাদনের শিল্পে পারদর্শী ট্রাম্প। তবে রক্ষণ সামলে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে মোকাবিলার বিষয়টি শিল্পে পরিণত করেছেন শি জিনপিং। সম্মতির ফলে বেইজিং মনস্তাত্ত্বিকভাবে আরও শক্তিশালী হবে বলেও ধারণা তাদের। তবে ট্রাম্পের অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ইতিহাসের কারণে সামনের ৯০ দিন আবারও রোলার কোস্টার রাইড দেখার শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
ডয়েচে ভেলের ইস্ট এশিয়া করেসপন্ডেন্ট মেলিসা চ্যান বলেন, ‘নির্ধারিত সময় শেষ হবার আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার কোন মিত্রের কথা শুনছেন, এর ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। আমরা আবারও একটি চড়াই উৎরাই দেখতেও পারি। তবে ঐক্যমতে পৌঁছানোর পর চীনের জনগণ মনে করছেন মার্কিনরা পিছু হটেছে।’
যুক্তরাজ্যের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক থাকার পরেও ব্রিটিশ পণ্য আমদানিতে ১০ শতাংশ শুল্ক নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। বিপরীতে সবচেয়ে সাপে নেউলে সম্পর্কের পরেও চীনা পণ্যে শুল্ক হার ৩০ শতাংশ। ফলে দেশভেদে ওয়াশিংটনের সম্পূরক শুল্কারোপের ক্ষেত্রে এই হার ১০ থেকে ৩০ শতাংশ থাকার বিষয়ে ধারণা বিশ্লেষকদের।





