ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর কথা স্বীকার করলো উত্তর কোরিয়া

উত্তর কোরিয়ার সেনা সদস্যরা
উত্তর কোরিয়ার সেনা সদস্যরা | ছবি: সংগৃহীত
0

রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করতে ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর কথা অবশেষে স্বীকার করলো উত্তর কোরিয়া। এটিকে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বলছে প্রতিবেশি দক্ষিণ কোরিয়া। এদিকে, কুরস্ক অঞ্চল দখল নিয়ে এখনো পাল্টাপাল্টি দাবি করে যাচ্ছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে আশাবাদী হলেও রাশিয়ার ক্রমাগত আক্রমণে হতাশ ট্রাম্প। মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জানান, দুই পক্ষের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সব হাতিয়ার ব্যবহারে প্রস্তুত মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়টি কেবল আলোচনার মধ্যেই আটকে আছে। যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়ে জেলেনস্কিকে রাজি করাতে পারলেও, পুতিনকে বাগে আনতে পারেননি ট্রাম্প। হামলা অব্যাহত রেখেছে রুশ বাহিনী। জবাবে ইউক্রেনও পাল্টা হামলা চালাচ্ছে রুশ ভূখণ্ডে।

রোববার (২৭ এপ্রিল) ইউক্রেনের একাধিক সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে শতাধিক ড্রোন হামলা চালায় রাশিয়া। এর মধ্যে ৫৭টি ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করে কিয়েভ। অন্যদিকে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, ইউক্রেনের শতাধিক ড্রোন ভূপাতিত করার পাশাপাশি এবং গাইডেড বোমা, রকেট ও দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করেছে তারা।

এদিকে, সামরিক চুক্তির অধীনে রাশিয়াকে সেনা পাঠানোর কথা প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন।

তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনীয় বাহিনীকে ধ্বংস করতে তার দেশের বীরদের পাঠানো হয়েছে। তবে সেনাসংখ্যা উল্লেখ না করলেও, ইউক্রেনের দাবি প্রায় ১৪ হাজার সেনা পাঠিয়েছে উত্তর কোরিয়া। এদের মধ্যে হতাহত হয়েছে ৪ হাজার সেনা।’

দক্ষিণ কোরিয়া বলছে, ইউক্রেনে সেনা মোতায়েন করে অপরাধমূলক কাজ করেছে উত্তর কোরিয়া। এটিকে অমানবিক ও অনৈতিক সিদ্ধান্ত বলে চরম নিন্দা জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জিওন হা-কিউ বলেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার অংশগ্রহণ জাতিসংঘ সনদ ও নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের স্পষ্ট লঙ্ঘন। এটি একটি অবৈধ কাজ। তাদের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি অপরাধমূলক কাজের স্বীকারোক্তি। অমানবিক ও অনৈতিক কাজের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।’

রাশিয়ার অব্যাহত হামলায় হতাশা প্রকাশ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘ভ্যাটিকানে জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকটি ফলপ্রসূ হয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই এর ফলাফল দেখা যাবে। তবে রাশিয়ার হামলা আসলেই হতাশাজনক। ইরানের সঙ্গেও গঠনমূলক আলোচনা চলছে।’

এতকিছুর পরও যুক্তরাষ্ট্র বারবার হুঁশিয়ারি জানিয়ে আসছে, যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়া ও ইউক্রেন একমত না হলে শান্তি আলোচনা থেকে সরে দাঁড়াবে ওয়াশিংটন। শান্তি ফেরাতে যুক্তরাষ্ট্র সব ধরনের হাতিয়ার ব্যবহার করার কথা বলেছেন মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা।

মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই যুদ্ধের অবসান চান। উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলতে সব ধরনের কূটনৈতিক পদক্ষেপ ব্যবহার করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এরই মধ্যে বেশ কয়েকবার বৈঠকও করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্ব নেতাদের সামনেই ট্রাম্পের নেতৃত্বে এসব আলোচনা হচ্ছে।’

এদিকে, ইউক্রেনের দখলে থাকা কুরস্ক অঞ্চল পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেয়ার দাবি করেছে রাশিয়া। সেখান থেকে ইউক্রেনীয় সেনাদের বিতাড়িত করে অভিযান সমাপ্তির ঘোষণা করেছে ক্রেমলিন। তবে মস্কোর এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট জানান, তার সেনারা এখনো কুরস্ক ও বেলগোরোদ অঞ্চলে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।

ইএ