সন্ধ্যার পরই ঘুটঘুটে অন্ধকার নামে গাজা উপত্যকায়। রোজার মধ্যে ত্রাণ সরবরাহের ট্রাক আটকে দেয়ার পর এবার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে ইসরাইল। অন্ধকারেই সেহরি ও ইফতার করতে হচ্ছে গাজাবাসীকে। ইসরাইল বলছে জিম্মিদের মুক্তি দিতে হামাসকে চাপে ফেলতে এই পদক্ষেপ নিয়েছে তারা। এদিকে, হামাসের অভিযোগ, বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন করে গাজাবাসীকে ব্ল্যাকমেইল করেছে ইসরাইল।
এমন অবস্থায় গাজার পরিস্থিতি দ্রুত অবনতির দিকে যাচ্ছে। বিশুদ্ধ পানিও পাচ্ছে না গাজার বাসিন্দারা। জাতিসংঘের ত্রাণ ও শরণার্থী সংস্থাগুলো বলছে, ইসরাইলি অবরোধে টানা ৯ দিন ধরে প্রয়োজনীয় সহায়তা পাচ্ছে না ২০ লাখ ফিলিস্তিনি। ইসরাইল অবরোধ তুলে না নিলে খুব শিগগিরই দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে গাজা উপত্যকায়।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থার প্রধান ফিলিপ লাজ্জারিনি বলেন, ‘যত সময় যাবে গাজাবাসীদের ওপর তত বেশি বিরূপ প্রভাব পড়বে। ইসরাইলি অবরোধে গাজা উপত্যকা চরম খাদ্য সংকটের মুখে পড়বে। কয়েক মাস গাজায় যে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল আবারও সে অবস্থায় ফিরে যাবে।’
জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, ‘গাজায় কোনোকিছুই প্রবেশ করছে না। খাদ্য থেকে শুরু করে মানবিক সহায়তার ট্রাক গেল এক সপ্তাহে প্রবেশ করেনি। কোনো মানবিক সহায়তার কর্মীদেরও প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। সব পক্ষকে এ বিষয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। মানবিক সহায়তার ট্রাক প্রবেশে ইসরাইলকে অনুমতি দিতে হবে।’
ইসরাইলের এমন কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে কাতার ও জর্ডান। ইসরাইলকে অবিলম্বে সব ধরনের অবরোধ তুলে নেয়ার আহ্বানও জানায় দেশগুলো। এদিকে, লোহিত ও এডেন সাগরে চলাচল করা ইসরাইলি জাহাজে আবারও হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা।
এখানেই থেমে নেই ইসরাইলি বাহিনী। উত্তর গাজার আল নাসর গ্রামে ভয়াবহ গুলিবর্ষণ চালায় তারা। এছাড়া, জেনিন ও রামাল্লাহ শহরে ফিলিস্তিনিদের বাড়ি ও গাড়ি লক্ষ্য করে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছে। ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছেন বাসিন্দারা।
এদিকে, রাজধানী তেল আবিবের ডিস্ট্রিক্ট আদালতের বাইরে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে ইসরাইলিরা। যেখানে তিনি দুর্নীতি মামলায় সাক্ষ্য দিচ্ছেন। নেতানিয়াহুকে দুর্নীতিবাজ বলে তার পদত্যাগের দাবি জানায় বিক্ষোভকারীরা।