সিরিয়ায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে প্রাণহানি হাজার ছাড়ালো

সিরিয়ায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে প্রাণহানি হাজার ছাড়াল | এখন
0

সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে আসাদপন্থিদের সাথে সরকারি বাহিনীর হামলায় গেল দুই দিনে প্রাণহানির সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের তথ্য বলছে, এরমধ্যে নিহত বেসামরিক নাগরিকের সংখ্যা সাত শতাধিক। বিশ্লেষকরদের মতে, আসাদের পতনের পর আহমেদ আল-শারা নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার সিরিয়ার নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে পারছে না।

স্বৈরাচারী শাসক বাসার আল আসাদের পতনের পর আবারো রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে সিরিয়া। দুই দিনের ব্যবধানে প্রাণ গেছে হাজারো মানুষের।

শনিবার (৮ মার্চ) সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, দেশজুড়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যে লাতাকিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জড়ো হয়ে, রাশিয়ার কাছে নিরাপত্তা চেয়ে স্লোগান দিচ্ছেন অসংখ্য সিরীয় নাগরিক।

ভিডিও'র সত্যতা যাচাইয়ের পর রয়টার্স জানায়, লাতাকিয়ার ঐ এয়ারবেইজটি ২০১৭ সাল থেকে ভূমধ্যসাগরীয় সামরিক ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করছে মস্কো।

গেল বৃহস্পতিবার জাবালেহ শহরে এক ব্যক্তিকে আটকের সময় আসাদবিরোধীদের হামলার কবলে পড়ে সরকারি বাহিনী। সেখান থেকে শুরু হওয়া দু'পক্ষের সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে আলেপ্পো থেকে শুরু করে রাজধানী দামেস্ক পর্যন্ত। যুক্তরাজ্যের মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটোরি ফর হিউম্যান রাইটসের তথ্য অনুসারে, ৪৮ ঘণ্টায় সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে বিচ্ছিন্ন হামলায় ৭শ'র বেশি সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছে। প্রাণ গেছে সরকারি বাহিনীর অন্তত ১২৫ সদস্যের। আর পাল্টা হামলায় নিহত আসাদ সমর্থকের সংখ্যা ১৪৮।

মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষকরা বলছেন, স্বৈরাচারী বাশার আল আসাদের পতনের পর এটাই দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘাত। দেশজুড়ে শুরু হওয়া এই অস্থিরতার দায় আহমেদ আল-শারার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকেই নিতে হবে বলে মনে করছেন তারা। দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলে দু'পক্ষের এই সহিংসতা দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।

এ ঘটনা থেকে প্রমাণ হয়, সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকার এখনও আসাদ-সমর্থকদের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারছে না। এছাড়া, সদ্য গঠিত স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও কর্তৃত্ব স্থাপনে ব্যর্থ হয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকার সংঘাত বন্ধ করতে চায়। কিন্তু এটা তাদের ক্ষমতার বাইরে। ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিন থেকেই পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। কয়েক সপ্তাহ আগে দামেস্ককে বিজয় সভা করে বলা হয়েছে, সব ব্রিগেড সরকারের নিয়ন্ত্রণে আছে। আসলে শুরু থেকেই এমন ভান করা হচ্ছে। কোনো কিছুই সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেই।

শনিবার সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় রয়টার্সকে জানায়, সহিংসতা এড়াতে উপকূলের দিকে যাওয়ার সব রাস্তা বন্ধ রাখা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত সিকিউরিটি ফোর্স। পরিকল্পিত এই সংঘাতের পেছনে জড়িতদের চিহ্নিত করতে জরুরি কমিটি ঘোষণা করেছে দেশটির অন্তর্বর্তী সরকার। সেনাবাহিনীর নির্দেশ অমান্য করে যে বা যারা এই অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করছে সামরিক আদালতেই তাদের বিচার হবে বলে জানাচ্ছে সিরীয় ডিফেন্স মিনিস্ট্রি।

ইএ