ক্যালেন্ডারের হিসেবে ৪৯৮ দিন পর পর বাড়ি ফিরেছেন ৩ ইসরাইলি জিম্মি। অসুস্থ বাবাকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে গেছেন ইয়ায়ার হর্ন। আর প্রথমবারের মতো নিজের মেয়েকে নাম ধরে ডেকেছেন সাগুই ডেকেল-চেন। যদিও গণমাধ্যমের সামনে কথা বলতে দেয়া হয়নি তাদের।
শনিবার যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী ফিলিস্তিনি বন্দিদেরও মুক্তি করেছে ইসরাইল। মিশর সংলগ্ন রাফা সীমান্তে বন্দিদের বহনকারী বাস ও অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছানো পর প্রাথমিক পরীক্ষায় দেখা গেছে অনেকেই স্বাস্থ্যের অবস্থা গুরুতর। এছাড়া, অধিকৃত পশ্চিমতীরে পাঠানো ৪ বন্দিকে নেয়া হয়েছে হাসপাতালে।
ফিলিস্তিনিদের একজন বলেন, ‘যে সব ফিলিস্তিনি বন্দি মৃত্যুদণ্ডাদেশ পেয়েছিলেন তাদেরকে স্বাগত জানানোর সৌভাগ্য হয়েছে আমাদের। তারা প্রকৃত বীর। এ কারণে ইসরাইল তাদের ফিলিস্তিনের বদলে এখানে পাঠাচ্ছে।’
হামাসের বিরুদ্ধেও জিম্মিদের নির্যাতনের অভিযোগ এনেছে ইসরাইলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তেল আবিবের সোওরাস্কি মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর স্বাস্থ্য দপ্তর জানায়, জিম্মিদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া সহজ হবে না।
ইসরাইলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জেনারেল মেডিকেল ডিভিশন প্রধান হ্যাগার মিজরাহি বলেন, ‘মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া তদারকি করতে দেশের সেরা মেডিকেল টিম প্রস্তুত। এই স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের আওতায় তাদের শারীরিক ও মানসিক সেবা দেয়া হবে। পরিবারের সদস্যদের সান্নিধ্যের পাশাপাশি রক্ষা করা হবে রোগীর ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তাও।’
হামাসের অনিশ্চয়তার মুখে জিম্মি বিনিময়ের ষষ্ঠ ধাপ কার্যকর হলেও যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ শুরু আগে বাকি জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার দাবি ইসরাইলিদের। শনিবার তেল আবিবের হোস্টেজ স্কয়ারসহ বিভিন্ন স্থানে জড়ো হয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন মুক্তি না পাওয়া জিম্মিদের পরিবারের সদস্যরা।
ইসরাইলিদের একজন বলেন, ‘আরো ৩ জিম্মি বাড়ি ফিরে আসার আমরা আনন্দিত। কিন্তু যারা এখনও হামাসের জিম্মায় তাদের নিয়ে উদ্বেগ যাচ্ছে না। আমাদের সরকার যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ কার্যকরের বিষয়ে আগ্রহী নয়।’
আরেকজন বলেন, ‘নেতানিয়াহু প্রশাসনের কারণে যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ ব্যাহত হতে পারে। আশা করি এমনটা হবে না এবং সরকার অতিদ্রুত সমঝোতার পথে হাঁটবে।’
এদিকে ফিলিস্তিনিদের গাজা ছেড়ে অন্যত্র সরাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে প্রস্তাব করেছেন- তার প্রতিবাদে শনিবার যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিন সেন্ট্রাল লন্ডনের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণের পর মার্কিন দূতাবাসের বাইরে জড়ো হয়ে ফিলিস্তিনের সমর্থনে স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা।