শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকালে যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া আটটি আতাকামাস মিসাইল ভূপাতিত করেছে রাশিয়া। মস্কো বলছে, ৩০০ কিলোমিটার রেঞ্জের এই মিসাইল দিয়ে রাশিয়ায় হামলার চেষ্টা ভয়াবহ আগ্রাসনের সামিল। সীমান্ত অঞ্চল বেলগোরোদে এই হামলা করেছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, আটটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র একদিনে ভূপাতিত করেছে তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ধ্বংস করা হয়েছে ইউক্রেন থেকে আসা ৭২ টি আকাশযানও। এই হামলার কড়া জবাবের হুশিয়ারি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। যদিও এই বিষয়ে এখনও মুখ খোলেনি কিয়েভ।
গেল বছরই বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই মিসাইল রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিলো। যাকে ক্রেমলিন সংঘাত দীর্ঘায়িত করার পশ্চিমাদের নতুন কৌশল হিসেবেই দেখছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট ঘাটতি আর চরম ঋণের বোঝার মধ্যেও ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা অব্যাহত আছে।
এদিকে, চলতি মাসেই ফ্রান্সের মিরাজ টু থাউজেন্ড মাল্টিরোল ফাইটার পাচ্ছে কিয়েভ। রাশিয়া বারবারই বলে আসছিল, ইউক্রেন যদি দূরপাল্লার পশ্চিমা সমরাস্ত্র যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার করে, কিয়েভেই হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা করবে মস্কো।
এদিকে যুদ্ধক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছে ইউক্রেন। এরপরও কোনভাবেই হার মানছেন না প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি জানান, কুরস্কে আগ্রাসনে অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ইউক্রেনের সেনারা। তার দাবি, এক ব্যাটেলিয়ন সেনা হতাহত হয়েছে কুরস্কে। রুশ-ইউক্রেন সীমান্তের এই অঞ্চলে প্রায় প্রতিদিনই চলছে সংঘাত।
পশ্চিমাদের সামরিক সহায়তা নিয়ে রাশিয়া বারবার এতো চড়াও হলেও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, এখন পর্যন্ত ইউক্রেনে অনেক বেশি সামরিক সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। নিউইয়র্ক টাইমসে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, কিয়েভ যেন রাশিয়ার সব হামলা প্রতিহত করতে পারে, সে কারণে নিরবচ্ছিন্ন সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
ইউক্রেনে নিরবচ্ছিন্নভাবে যুক্তরাষ্ট্র আর ন্যাটোর সামরিক সহায়তা দেয়ার বিষয়টি কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় রাশিয়ার কাছে। কৃষ্ণসাগরে ন্যাটোর সামরিক মহড়াতেও আরও চটছে মস্কো। যদিও ট্রাম্প ক্ষমতায় আসায় অস্ত্র সহায়তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় প্রতিরক্ষা খাতে বাজেট বাড়াচ্ছে ইউক্রেন। ২০২৫ সালের জন্য যা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। দেশের মোট বাজেটের ৬২ শতাংশ। পাশাপাশি দূরপাল্লার ৩০ হাজার ড্রোন ৩ হাজার ক্রুজ মিসাইল আর ড্রোন গাইডেড মিসাইল তৈরির লক্ষ্য নিয়েছে কিয়েভ।
এদিকে, ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখলের পর শনিবার এই প্রদেশে জরুরি অবস্থা জারি করেছে রাশিয়া। কৃষ্ণ সাগরে গেল মাসে জ্বালানি তেল পড়ে পরিবেশ দূষণের পর কর্মীরা টনে টনে দূষিত বালু সরাচ্ছে।