কোনোমতে সচল থাকা উত্তর গাজার শেষ হাসপাতাল কামাল আদওয়ানে বর্বর হামলা চালিয়েও থামলো না ইসরাইলি বাহিনী। হাসপাতালটিতে ন্যাক্কারজনক হামলার পর আগুন ধরিয়ে ধ্বংস করে দিয়েছে নেতানিয়াহুর আগ্রাসী সেনারা।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) ইসরাইলি আগ্রাসনে কামাল আদওয়ান হাসপাতালটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর শনিবার এক করুণ দিনের মুখোমুখি গাজাবাসী। এভাবে গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা মানে হাজার হাজার ফিলিস্তিনির জন্য মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার সমান বলে মন্তব্য করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এছাড়া হামাস নিধনের নামে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, সাংবাদিক ও সাধারণ বাসিন্দাদের ওপর প্রতিদিনিই চালানো আগ্রাসনে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নিরীহ ও বাস্তুচ্যুত গাজাবাসীর।
এতো কিছুর পরও হাসপাতালটিকে হামাস একটি শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করায় হামলা চালানোর দাবি করা হচ্ছে। এমনকি সাধারণ রোগী ও আহতদের হাসপাতালটি থেকে নিরাপদ সরিয়ে নেয়া কথাও বলছে ইসরাইলি বাহিনী। তবে এসব দাবি অস্বীকার করছে গাজার স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। এক টেলিগ্রাম বার্তায় সংগঠনটি বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র ও কিছু পশ্চিমা দেশের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে গাজায় এভাবেই দিনের পর দিন যুদ্ধাপরাধ করে যাচ্ছে দখলদার ইসরাইল। হাসপাতালে আগুন দেয়া স্পষ্টতই একটি যুদ্ধাপরাধ।
কামাল আদওয়ান হাসপাতালে ইসরাইলি বাহিনীর এই হামলার ঘটনায় কঠোর নিন্দা জানিয়েছেন অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলটির মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক ফ্রান্সেসকা আলবানিজ। পশ্চিমাদের দ্বারা গাজায় গণহত্যা সংঘটিত হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। যা গণহত্যার ইতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকার সময় বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। তুলে ধরেছেন নির্মম নির্যাতনের কথাও।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে কমপক্ষে সাড়ে ৪৫ হাজার ফিলিস্তিনির প্রাণ গেছে। এমনকি ওষুধ ও খাদ্য সংকট চরমে পৌঁছানোয় অনেক শিশু মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে বলে তথ্য দিয়েছে জাতিসংঘ। এ অবস্থায় অতিদ্রুত মানবিক সহায়তা প্রবাহ চালুর আহ্বান জানিয়েছে ফিলিস্তিনে থাকা জাতিসংঘের ত্রাণ সহায়তা সংস্থা।