দেড় লাখের বেশি মানুষের বসতি যুক্তরাষ্ট্রের আরকানসাস অঙ্গরাজ্য। যা মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় সাড়ে পাঁচ শতাংশ। এরমধ্যে অঙ্গরাজ্যটির ফায়েটভিল শহরে অভিবাসীর হার প্রায় ছয় শতাংশ। পরিসংখ্যানটি ২০২২ সালের হলেও, বর্তমানে যেভাবে জনবৈচিত্র্য বাড়ছে, এই ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২৬ সাল নাগাদ এটি ২৭ শতাংশ ছাড়িয়ে যাওয়া আভাস মিলছে।
শুধু ফায়েটভিল নয়, রাজ্যজুড়েই বাড়ছে অভিবাসীদের জনসংখ্যা। যারা প্রত্যেকেই যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিসহ নানা খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানও রেখে চলেছেন।এরমধ্যে শ্রম খাতে সাত শতাংশ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ১০ শতাংশের বেশি। আর নির্মাণখাতে প্রায় ১৬ শতাংশ জনবল বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অভিবাসীরাই। তবে এদের বেশিরভাগই লাতিন এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত।
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী একের পর এক বক্তব্য কতটা প্রভাব ফেলছে অভিবাসীদের ওপর?
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষায় ডিগ্রিধারীদের নাগরিকত্ব দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ট্রাম্প। সাম্প্রতিক এই প্রতিশ্রুতির কারণে অভিবাসীদের অনেকেই কর্মজীবন নিয়ে আশাবাদী।
শিক্ষার্থীদের একজন বলেন, ‘এটা আশা জাগায়। আমি এখানে পড়াশোনা করছি এবং এখানে কাজ করতে চাই। আমার মত অনেকেই চায় এখানে ক্যারিয়ার গড়তে। কিন্তু প্রক্রিয়া খুব ধীরগতির হলে তা কঠিন হয়ে পড়বে।’
বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশটিতে অভিবাসীর সংখ্যাতো বেড়েছেই, ওয়ালমার্ট-টাইসনের মতো নামিদামি প্রতিষ্ঠানগুলোও নির্ভর হয়ে পড়ছে অভিবাসী কর্মজীবীদের ওপর। কারণ-স্থানীয় কর্মসংস্থানে বাড়ছে দক্ষ কর্মীর চাহিদা।
নাগরিকদের একজন বলেন, ‘এখানে অভিবাসীদের জন্য ভালো পরিবেশ রয়েছে। কারণ অর্থনৈতিক এবং সামাজিক অবদানের মধ্য দিয়ে আমরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছি। ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি যদি বাস্তবায়িত হয়, তবে এটি আমাদের জন্য বড় সুযোগ হতে পারে।’
তবে ট্রাম্পের সম্ভাব্য নীতি নিয়ে অনেক অভিবাসীর মধ্যে শঙ্কাও আছে। অনেকের মনেই প্রশ্ন- 'আমেরিকা ফার্স্ট' নীতির আওতায় অভিবাসীদের কল্যাণে আসলে কতটা নিবেদিত হবেন ট্রাম্প। কিংবা আদৌ তার দাবিকৃত এসব নীতি কার্যকর এবং স্থায়ী হবে কি না।
বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘ট্রাম্পের মিশ্র নীতির জন্য অনেকে সন্দিহান। আমরা বিশ্বাস করতে চাই যে এখানে আমাদের জন্য সুযোগ রয়েছে, কিন্তু আস্থার সংকটও আছে।’
ঐতিহাসিকভাবে রিপাবলিকানশাসিত আরকানসাস। নব্বইয়ের দশকে এখানকারই সন্তান বিল ক্লিনটন বাদে আর কোনো ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থীই জেতেননি এ রাজ্যটিতে। এবারও রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্পের জয়ের ব্যাপারে স্থানীয়রা আশাবাদী হলেও ৭৮ বছর বয়সী এ নেতার অভিবাসনবিরোধী দৃষ্টিভঙ্গি শঙ্কায় ফেলেছে রাজ্যের অভিবাসী জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশকে। তারা ভাবছেন, ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতি কিংবা হুমকি- তাদের জন্য বাস্তব সুযোগ নিয়ে আসবে নাকি ফেলবে আরও অনিশ্চয়তায়।