আপালেচি বিদ্যালয়টি জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের রাজধানী আটলান্টা থেকে প্রায় ৭২ কিলোমিটার উত্তর–পূর্বে অবস্থিত। স্থানীয় সময় বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল সোয়া ১০টার দিকে প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থীর সামনেই বন্দুকধারী এলোপাতাড়ি গুলি শুরু করে। আতঙ্কিত হয়ে স্কুলের ভেতর ছোটাছুটি শুরু করে শিক্ষার্থীরা।
কয়েক মিনিটের ব্যবধানে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু এর আগেই হামলাকারীর বেপরোয়া গুলিতে প্রাণ হারান দুই শিক্ষক ও দুই ছাত্র। নিহত একজন ছাত্র প্রতিবন্ধী ছিলেন। আহত হয়েছেন অন্তত নয়জন।
শিক্ষকদের একজন বলেন, ‘মার্কিন সরকার তাদের সন্তানদের, ছাত্রদের জীবনের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। বন্দুক সহিংসতা এখানে একটি গুরুতর সমস্যা।’
অভিভাবকদের একজন বলেন, ‘খুবই ভয়ঙ্কর ঘটনা। আমার সন্তানও স্কুলে ছিল। তাকে নিয়ে আমরা খুব ভয়ে ছিলাম।’
আরেকজন বলেন, ‘আমার দুই সন্তান পাশের স্কুলে পড়াশোনা করে। বন্দুক হামলার পর তাদের স্কুল থেকে বার্তা আসা শুরু করে। বিষয়গুলো খুবই আতঙ্কের।’
কোল্ট গ্রে নামে ১৪ বছর বয়সী এই হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সে নাবালক হলেও, প্রাপ্তবয়স্ক বিবেচনা করে তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হবে। তবে হামলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে এখনো কিছু জানা জায়নি। এছাড়া, কী ধরনের অস্ত্র এবং কয়টি গুলি ছোঁড়া হয়েছে সে সম্পর্কে কোনো তথ্য জানায়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
জর্জিয়া ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের ডিরেক্টর ক্রিস হোসি বলেন, ‘স্কুল থেকে ফোন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়। পরে সন্দেহভাজন হামলাকারী অস্ত্র ফেলে আত্মসমর্পণ করলে পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয়। আহত নয়জনকে স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।’
এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন। এক প্রতিক্রিয়া রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বন্দুক আইনের সংস্কার করতে হবে। আর বন্দুক আইনকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে নিশ্চিহ্ন করার প্রতিশ্রুতি দেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কামালা হ্যারিস।
ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কামালা হ্যারিস বলেন, ‘এটি খুবই দুঃখজনক ঘটনা। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন না। তাদের সন্তান যেনো স্কুল থেকে জীবিত অবস্থায় বাসায় ফিরতে পারে সেই নিশ্চয়তা তৈরি করতে হবে। বন্দুক হামলার এসব ঘটনা একেবারে মুছে ফেলতে হবে।’
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলার ঘটনা বেড়েই চলেছে। ভায়োলেন্স আর্কাইভের এক গবেষণার তথ্য মতে, চলতি বছরে এ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৩৫৮টি গুলির ঘটনা ঘটেছে।